অন্ধকার চক্রের ছোবলে আলোকিত সাইদুল

ফ্রিডম সিলেট প্রতিবেদক:: বড়লেখা পৌর এলাকার এক জনপ্রিয় নাম সাইদুল ইসলাম। পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের গাজিটেকা আইলাপুর গ্রামের মৃত আবদুল খালিকের ছেলে তিনি। একটি সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে উঠে আসা সাইদুল ইসলাম পৌর এলাকার তৃণমূল মানুষের কাছে এক বিশ্বস্ত ও নির্ভরতার নাম। সহযোগিতা, সামাজিকতা, বিচার-শালিস, গৃহ-বিবাদ, বিরোধ মেটানো—সবকিছুতেই সমাধান হিসেবে যে নামটি বিবেচিত হয়, তিনি সাইদুল ইসলাম।
অবশ্য এই অবস্থান একদিনে তৈরি হয়নি। তিলে তিলে মানুষের মনের মধ্যে ভালোবাসার আলো জ্বালিয়েছেন তিনি। সেই আলোতে আলোকিত করেছেন বড়লেখা পৌর এলাকা। তবে আলোর বিপরীতে অন্ধকারও থাকে। আলো সহ্য না হওয়া মানুষগুলো অন্ধকারমুখী। অন্ধকারের মানুষগুলো গিলে খেতে চায় সকল আলো। ফলে একের পর এক চলে আলো নিভিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। অব্যাহত চেষ্টার ফল—এখন কারাগারে আলোকিত জন। বর্তমানে একাধিক মামলায় কারাভোগ করছেন সাইদুল ইসলাম।
গেলো আওয়ামী দুঃশাসনে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা যখন মামলা-হামলায় জর্জরিত, তখন তাদের পরিবারের পাশে বড়লেখা উপজেলায় সর্বাগ্রে যিনি আর্থিক সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছিলেন, তিনি সাইদুল ইসলাম। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একজন নিবেদিতপ্রাণ সমর্থক হিসেবে নিরলসভাবে দীর্ঘ তিন যুগ মাঠ চষে বেড়িয়েছেন তিনি। বিনিময়ে দলীয় পদবি না জুটলেও পেয়েছেন তৃণমূল মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালোবাসা—যার প্রমাণ গোটা পৌর এলাকার ত্যাগী ও দলীয় নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগ শাসনামলে সাইদুল ইসলামের নামে হয়েছে একাধিক মামলা। ফ্যাসিবাদী আমলে স্থানীয় সাংসদ ও বন ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, তার ভাগিনা উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান এবং আরেক ভাগিনা জুয়েল আহমদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের আক্রোশে তাকে একাধিকবার জেল খাটতে ও মিথ্যা মামলার শিকার হতে হয়েছে।
বড়লেখা গাজিটেকা সাত মৌজার তিনি প্রধান কর্ণধার। একই সাথে বড়লেখা উপজেলায়ও তাঁর সুনাম বিস্তৃত থাকায় যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সমাধানে এলাকাবাসীর ডাকে তিনিই থাকেন কান্ডারীর ভূমিকায়। তিনি বিচারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি একটি এতিমখানার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তখন থেকেই মাদ্রাসার এতিম ছেলে-মেয়েদের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। একই সঙ্গে বড়লেখা বাজার বণিক সমিতিতে তিনি ছিলেন একজন সদস্য। ফলে সেখানে তৈরি হয় সাইদুল ইসলামের শক্ত একটি প্রতিপক্ষ, যারা দিনে-রাতে তাকে ঘায়েল করার জন্য উঠে পড়ে লাগে।
২০২০ সালে বড়লেখা পৌরসভায় যুবলীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন ও শামীম আহমদের সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব ও ক্ষমতার দাপটে তার বিরুদ্ধে জি.আর ১০১/২০২০ (বড়), জি.আর ১০২/২০২০ (বড়) মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় সাইদুল ইসলাম দীর্ঘদিন হাজতবাসের পর জামিনে মুক্তি লাভ করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বড়লেখা উপজেলার প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের দ্বারা তিনি আর্থিক ও মানসিকভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
২০২০ সালের বড়লেখা পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোবাইল প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হলেও তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী বন ও পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন সরজমিন উপস্থিত থেকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা প্রয়োগ করে সাইদুল ইসলামকে বিএনপির ট্যাগ লাগিয়ে পরাজিত ঘোষণা করেন এবং আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল ইমাম মোহাম্মদ কামরান চৌধুরীকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
সাইদুল ইসলামের এত জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক হিংসাবশত তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য একের পর এক তাণ্ডবলীলা চলমান রয়েছে। বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবের সময় স্থানীয় ও সিলেট বিভাগীয় পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন, যার প্রমাণ তার নামীয় (Saidul Islam) ফেসবুক আইডিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
৫ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা ও সাধারণ জনগণ বড়লেখা থানা ঘেরাও করলে, সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে বড়লেখা থানাসহ ওসি ও সকল পুলিশ সদস্যরা প্রাণে রক্ষা পান।
জেলে থাকা সাইদুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন অনেকেই। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হচ্ছে অনেককে। রাষ্ট্রের কাছে তাদের দাবি—সাইদুল ইসলামের প্রতি ন্যায়বিচার করা হোক।
“জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার আন্দোলন: ৫ আগস্ট সাইদুল ইসলামের অবস্থান (ভিডিও লিংক)” https://www.facebook.com/watch/?v=461615666699420



পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন আহত হয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন