সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে ঠিকাদারদের ক্ষোভ
       
খুঁজুন                
                               
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে ঠিকাদারদের ক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ
সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে ঠিকাদারদের ক্ষোভ

সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কাজ করেও টাকা পাচ্ছেন না ঠিকাদাররা। এমনকি দিনের পর দিন অপেক্ষায় থেকেও জামানতের টাকা পাচ্ছেন না তারা। অন্যদিকে; উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বরাদ্দও কমে যাচ্ছে। বাতিল হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্পও।

 

ঠিকাদাররা জানিয়েছেন- গত ৫ মাসে তাদের প্রায় ৩৫-৪০ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। এরমধ্যে রয়েছে বিল ও জামানতের টাকা। তহবিল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে টাকা ছাড় দেয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।

তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- বর্তমান প্রশাসক সময় কম দেয়ার কারণে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর লিখিত আবেদনে সিটি করপোরেশনের নানা বিষয় জানিয়েছেন ঠিকাদাররা।

 

তারা জানিয়েছেন- বারবার ধরনা দিয়েও কাজের জন্য জামানত রাখা অর্থও ফেরত পাচ্ছেন না। আগস্টে সরকার পতন হলে বিভিন্নস্থানে উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। তবে সিসিকের ঠিকাদার এসোসিয়েশন সকল কার্যক্রম চলমান রাখে। কিন্তু মেয়রের পরিবর্তে গত ৫ মাস ধরে প্রশাসক কর্তৃক সিসিক পরিচালিত হলেও এখন পর্যন্ত পূর্বে সম্পন্নকৃত সকল কাজের এবং চলমান সম্পন্ন কাজের কোনো বিল দেয়া হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর সিসিকের প্রকৌশল বিভাগ সাইড পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরও কোনো বিল দেয়া হচ্ছে না। বিল না পাওয়ায় ঠিকাদাররা পড়েছেন আর্থিক সংকটে। একদিকে চলমান কাজের মালামাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধের চাপ, কর্মরত  শ্রমিকদের মজুরি, ব্যাংক থেকে উত্তোলিত ঋণের কিস্তি পরিশোধের চাপ। সবকিছু মিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঠিকাদাররা।

 

সিলেট সিটি করপোরেশন কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সভাপতি মাসুম ইফতেখার রসুল শিহাব জানিয়েছেন- ‘৫ই আগস্টে পূর্বে সম্পন্ন হওয়া কাজের লিখিত ও স্বাক্ষরিত বিলের টাকাও এখনো পাইনি। ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে থাকেন। সময়মতো বিলের টাকা না পাওয়ায় একদিকে ব্যাংকের সুদ বাড়ছে। অপরদিকে সিআইবি রিপোর্টও খারাপ হচ্ছে। সিআইবি রিপোর্ট খারাপ হলে ভবিষ্যতে ব্যাংক ও আমাদের কোনো ঋণ দেবে না। তাই বিলের টাকা না পেলে চলমান সকল কার্যক্রম বাধ্য হয়েই বন্ধ রাখতে হবে। ফলে জনদুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।’

 

সিলেট সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন- সিলেট সিটি করপোরেশনের বিভাগীয় কমিশনারকে অতিরিক্ত দায়িত্বে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাই প্রশাসক নিয়মিত দায়িত্ব পালনের পর সিসিকের জন্য সময় বের করেন। জনপ্রতিনিধিরা যেভাবে সময় ম্যানেজ করতে পারেন প্রশাসকের পক্ষে সেভাবে সময় বের করা সম্ভব হচ্ছে না। পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ায় সকল কাজ পরিদর্শন শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। যেকোনো বিলের অনুমোদনের জন্য প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টরা সরজমিন পরিদর্শন করেন। সবকিছু ঠিক থাকলে তারপর বিল অনুমোদন করা হয়। সেখানে ধীর গতি রয়েছে।

 

সিলেট সিটি করপোরেশন কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এনায়েত আহমেদ রনি জানিয়েছেন- ‘এখন কাজ বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের আর কোনো পথ খোলা নেই। সব স্থানে কাজ বন্ধ রাখলেও একমাত্র আমরা সিলেটের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে নগরীতে কোনো কাজ বন্ধ রাখিনি। কিন্তু কাজ সম্পন্ন করার পরও বিল পরিশোধ না করাটা আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি।’

সিলেট সিটি করপোরেশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নুর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন- বিল ও জামানতের টাকা আটকে থাকার কথা সত্য। সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমানে একটি বডি রয়েছে। আমরা ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

 

এদিকে- সিলেট সিটি করপোরেশনে বর্তমানে বরাদ্দও কমে গেছে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের তহবিলও কমছে। এতে করে দুশ্চিন্তা বাড়ছে কর্মকর্তাদেরও। এই অবস্থায় নগরের উন্নয়নে নেয়া ২৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প বাতিল হয়ে গেছে। সাবেক পরিষদ নগরের উন্নয়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। ২০২৪ সালের এপ্রিলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ২ হাজার ৭শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প জমা দিয়েছিল। সড়ক, ড্রেন, ছড়া-খাল, কালভার্ট, ওয়াকওয়ে, স্ট্রিট লাইট, ফুটপাথসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ পরিচালনার জন্য প্রথমে ২৭০০ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেয়া হয়। পরে সেটি কমিয়ে আড়াই হাজার কোটি টাকায় নিয়ে আসা হয়। প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর সেই প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। দুই দফা বন্যায় নগরীর রাস্তাগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে ক্ষতও সামাল দিতে পারেনি সিলেট সিটি করপোরেশন। ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও ড্রেন সংস্কারে মন্ত্রণালয়ে চাওয়া হয়েছিল ৫৮৮ কোটি টাকা। বিপরীতে বরাদ্দ আসে মাত্র ২ কোটি।

 

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাই রাফিন সরকার জানিয়েছেন- প্রকল্প বাতিল হয়েছে। প্রকল্প বাতিল হলে অন্য কোনো ভাবে প্রকল্প আসবে। তখন কাজ হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমানে নতুন বর্ধিত এলাকায় ১৪০০ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান রয়েছে। তিনি বলেন- বর্তমান প্রশাসকের অনেক কাজ। এরপরও তিনি সময় বের করে সিটি করপোরেশনে সময় দিচ্ছেন। যেসব কাজ আটকে আছে সেগুলো দ্রুত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।