সন্ত্রাসী হামলায় জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গোলাপগঞ্জের শিক্ষার্থী আবু তাহের
       
খুঁজুন                
                               
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

সন্ত্রাসী হামলায় জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গোলাপগঞ্জের শিক্ষার্থী আবু তাহের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬:৫৫ অপরাহ্ণ
সন্ত্রাসী হামলায় জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গোলাপগঞ্জের শিক্ষার্থী আবু তাহের

সিলেটের গোলাপগঞ্জের নলুয়া কান্দিগ্রামে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের আক্রোশের শিকার হয়ে জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জাঁ লড়ছে শিক্ষার্থী আবু তাহের। সন্ত্রাসী ও অপহরণকারীরা তাকে মারপিঠ ও ইলেকট্রিক শক দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে মৃত ভেবে কান্দিগ্রাম ঈদগাহের পাশে খালি জায়গায় ফেলে রেখে চলে যায় অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের স্বজনরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আসামীদের পক্ষ নিয়ে সংঘবদ্ধ একটি শক্তিশালী অপরাধ চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আসামীদের মামলার চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই অভিযোগ করেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ১ নং বাঘা ইউনিয়নের নলুয়া কান্দি গ্রামের মৃত চেরাগ আলীর পুত্র নূরুল ইসলাম।

 

 

 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, নলুয়া কান্দিগ্রামের কয়েক জন বিবেকহীনদের লাঞ্চনা বঞ্চনা আর হীন আক্রোশের শিকার হয়ে আমার আপন ভাতিজা উত্তরভাগ আলীয়া মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আব্দুস সালামের পুত্র আবু তাহের (১৯) আজ জীবন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জাঁ লড়ছে। সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের আইসিউতে আবু তাহের যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে গত ২৮ মার্চ ২০২৫ তারিখ রাত ১১ টা ৫০ মিনিটের সময় নলুয়া কান্দিগ্রামের মৃত আব্দুর রহিম চেরাগের ছেলে রাহেল আহমদ (২২), একই গ্রামের লায়েক আহমেদের ছেলে ছানি আহমদ (২০), ভাদেশ্বর দক্ষিণভাগ গ্রামের মাহতাব আহমদের ছেলে তুরুকভাগ পশ্চিমপাড়া গ্রামে বসবাসকারী ফরহাদ আহমদ (২০), দাসপাড়া এলাকার আব্দুল আজিদ (হাফিজ)’র ছেলে মাহবুব (২০) সহ অজ্ঞাত নামা আরও ৫/৬জন সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ আবু তাহের (১৯)কে বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

নূরুল ইসলাম জানান, অপহরণকারী রাহেল, ছানি, ফরহাদ ও মাহবুবরা পুর্ব পরিকল্পিত ভাবে আমার ভাতিজা আবু তাহেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করে। সন্ত্রাসীরা ধারালো দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তকে প্রাণে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় সন্ত্রাসীরা আমার ভাতিজা আবু তাহেরকে শাহপরান (রহঃ) থানার দাসপাড়াস্থ ৬নং রোডের খেলার মাঠে নিয়ে হাত-মুখ বেঁেধ মাথা থেকে শুরু করে সমস্ত শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর করে এবং ডিজিটাল ইলেকট্রিক ডিভাইজ দিয়ে ইলেকট্রিক শকের মাধ্যমে হত্যা করার চেষ্টা করে এবং ভাতিজাকে জোর করে নেশা জাতীয় ঔষধ খাওয়ালে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এসময় তাকে মৃত ভেবে কান্দিগ্রাম ঈদগাহের পাশে ফেলে রেখে চলে যায় অপহরণকারীরা। পরে এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় নলুয়া কান্দিগ্রামের রাহেল আহমদ (২২), ছানি আহমদ (২০), ফরহাদ আহমদ (২০), মাহবুব (২০) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করি। মামলা নং- ০৩, তারিখ ০৩/০৪/২০২৫ইং।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের ২১ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি। গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারের জন্য কয়েক দফা আসামীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েও তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশী অভিযানের আগাম খবর কে বা কারা আসামীদের অবগত করলে তারা দ্রুত নিরাপদে অন্যত্র পালিয়ে যায়। আসামীদের স্বজনরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। সন্ত্রাসী ও অপহরণকারী আসামীদের পক্ষ নিয়ে সংঘবদ্ধ একটি শক্তিশালী অপরাধ চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আসামীদের মামলার চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্ভন করছে।

সংবাদ সম্মেলনে নূরুল ইসলাম জানান, নিরুপায় হয়ে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য সিলেট জেলা পুলিশ সুপার বরাবর গত ১৩/০৪/২০২৫ ইং তারিখে লিখিত দরখাস্ত প্রদান করি এবং দরখাস্তের অনুলিপি প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরণ করি। যার স্মারক নং (৫০)১৩/০৪/২০২৫ইং। পুলিশ সুপার দরখাস্ত হাতে পেয়ে সাথে সাথে গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে মুঠোফোনে আসামীদের গ্রেফতারের জন্য তিন দিনের সময় দেন। অথচ তিন দিন পেরিয়ে গেলেও আজ অবধি কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি। আসামীরা প্রকাশ্যে তাদের বাড়ি ঘরে বসবাস করলেও রহস্যজনক কারণে আসামীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। অপরদিকে আমার ভাতিজা আবু তাহেরের শারিরীক অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সে সিলেট ওসমানী হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি রয়েছে। আবু তাহেরের পিতা আব্দুস সালাম নিতান্তই অসহায় ও গরীব, তার তিন ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে আবু তাহের ২য়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্রম ব্যক্তি আবু তাহেরের পিতা আব্দুস সালামের পক্ষে ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনসহ পরিবার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ছেলের এমন করূণ পরিনতি দেখে পিতা আব্দুস সালাম ও মা মাজেদা বেগম বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। তাদের দাবি যারা তাদের ছেলেকে অপহরণ করে এমন অবস্থা করেছে, দেশের প্রচলিত আইনে তাদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি ও  ন্যায় বিচারের সার্থে আমার ভাতিজার উপর চালানো নির্মম নির্যাতনের সাথে যারা জড়িত, তাদের অতিদ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংলিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।