টানেলের মতোই অকেজো ৪৫০ কোটি টাকার কর্ণফুলী রিসোর্ট


একেবারে অলস পড়ে আছে সাড়ে ৪শ কোটি টাকায় নির্মিত বাংলাদেশের একমাত্র সেভেন স্টার মানের রিসোর্ট। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলের বাজেট বাড়িয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য রিসোর্টটি তৈরি করে সেতু বিভাগ। কমিশন বাণিজ্যের জন্য অযৌক্তিক এ স্থাপনা নির্মাণে অনুমোদন দিয়েছিলেন তখনকার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সিদ্ধান্তহীনতায় সৃষ্ট জটিলতার কারণে যেটি এখন পরিত্যক্ত হওয়ার পথে।
চোখধাঁধানো বিলাসবহুল রিসোর্ট; চারিদিকে আভিজাত্যের অফুরন্ত ছোঁয়া। সুসজ্জিত বহুতল ভবন। মাঝখানে নান্দনিক দুটি সেতু। তলদেশে বয়ে চলেছে নদী। মনোরম সুইমিংপুল। আছে প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুট আয়তনের আধুনিক সুসজ্জিত একটি বাংলো।
প্রকল্পের আওতায় কর্ণফুলী টানেলের আনোয়ারা প্রান্তে নির্মাণ করা হয় বাংলাদেশের প্রথম সেভেন স্টার মানের এ রিসোর্ট। ব্যয় করা হয় সাড়ে ৪শ কোটি টাকা। টানেলের ব্যয় বাড়িয়ে অযৌক্তিকভাবে এটি নির্মাণ করায় ৬ মাস পরও পড়ে আছে একেবারে খালি।
রিসোর্টের ইনচার্জ মো. আবদুস সামাদ আজাদ বলেন, এতে বাংলো আছে ৩১টি, যার মধ্যে একটি ভিআইপি। এছাড়া, টেনিস মাঠ আর কমিউনিটি সেন্টার আছে।
বঙ্গোপসাগর উপকূলে পার্কিং সমুদ্রসৈকতের পাশে ৭২ একর জায়গায় সার্ভিস এরিয়াজুড়ে রিসোর্টটি। এতে ভিআইপি অতিথিশালা ছাড়া আছে ৩০টি রেস্টহাউস ও বিশ্রামাগার। এছাড়া, আছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হেলিপ্যাড, মসজিদ, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। অপরিকল্পিতভাবে করায় গোটা প্রকল্পটি লোকসানের মুখে।

নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীর খুব কাছাকাছি এ রিসোর্টটি ঠিক কতটা বায়েবল হবে আমি বুঝতে পারছি না। এখানে মাত্র কয়েকটি পরিবার থাকতে পারবে। সেখান থেকে কতটাকা তুলতে পারবে, সেটা জানি না।’
এদিকে, সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি কোনও কোম্পানিকে শিগগিরই লিজ দেয়া হবে।
সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল কালম আজাদ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি টেন্ডারের মাধ্যমে কোনো ভালো কোম্পানিকে লংটার্ম লিজ দিতে।’
দশ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ টানেল নির্মাণ করা হলেও প্রতিদিন লোকসান ২৭ লাখ টাকা। খালি পড়ে থাকলে লোকসানের তালিকায় যুক্ত হবে এ রিসোর্টও।
আপনার মতামত লিখুন