রমজানে সিলেটে যে দামে বিক্রি হবে গরু-খাসির মাংস ও মুরগী
       
খুঁজুন                
                               
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

রমজানে সিলেটে যে দামে বিক্রি হবে গরু-খাসির মাংস ও মুরগী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ
রমজানে  সিলেটে  যে দামে বিক্রি হবে গরু-খাসির মাংস ও মুরগী

আর কয়েকদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান। রমজান মাসে মাছ, মাংসের চাহিদা অনেকগুণ বেড়ে যায়। যার সুযোগ নেয় একটি অসাধু চক্র।

 

 

এবার এই চক্রের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক)।

 

 

 

নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী পবিত্র রমজান মাসের জন্য গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, খাসীর মাংস ১০০০ টাকা, মহিষ ৬৫০ টাকা, ছাগল/ভেড়া ৯৫০টাকা, সোনালী মুরগী ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, ব্রয়লার মুরগী ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি করার কথা বলা হয়েছে।

 

 

 

 

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টায় নগরভবনের সভাকক্ষে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভা থেকে এই মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

 

 

 

 

আসন্ন রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা, বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, সেহরী ও ইফতারের সময় সাইরেন বাজানো ব্যবস্থা সচল রাখা এবং পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

 

 

অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) প্রশাসক ও সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) খান মো. রেজা-উন-নবী।

 

 

 

 

এসময় তিনি বলেন, পরিবর্তিত বাংলাদেশে কেউ আকাশ থেকে বা বাইরে থেকে এসে আমাদের সুন্দর দেশ নির্মাণ করে দেবে, এই স্বপ্ন না দেখাটাই সমিচীন। আমাদের দেশটাকে আমাদের নিজেদের সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের ভালো থাকার যে অনুসঙ্গ তার মধ্যে অন্যতম যে আমরা যেনো স্বস্তির মধ্যে থাকতে পারি। এই স্বস্তির মধ্যে রয়েছে বাজার মূল্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, আমরা এবং আমাদের পরিবার ঘরে এবং বাইরে যেনো নিরাপদে থাকতে পারি। সবমিলিয়ে একটা স্বস্তির মধ্যে থাকতে পারি। আমাদের জীবনযাপন যেনো সুন্দর হয়।

 

 

 

 

নাগরিক হিসেবে আমরা যেভাবে থাকতে চাই, সেই চাহিদাটা আসলে সবার মধ্যে একই রকম। বিগত দিনে সমাজের যেসব কারণে আমরা কষ্ট পেয়েছি, আমরা সেসব থেকে যতটুকু সম্ভব কাটিয়ে উঠতে চাই। আমরা দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ চাই, সেটা হোক কোনো সুপারশপ কিংবা খোলা বাজার। সমজের সকল শ্রেণীর মানুষ চায় জিনিসপত্রের দাম যেনো ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। এই সকল বিষয় নিশ্চিত করতে সিলেট সিটি কর্পোরেশন আপনাদের সকলের সহযোগিতা চায়।

 

সম্প্রতি সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে ৩৫ হাজার টিসিবির কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আরো কার্ড বিতরণ করা হবে। জনসাধারণের সুবিধার্থে খোলাবাজারে খাদ্যশস্য বিক্রয় কার্যক্রম (ওএমএস) চালু রয়েছে।

 

 

 

 

তিনি বলেন, পবিত্র রমজান মাস সিয়াম, সাধনা, ত্যাগ ও সংযমের মাস। পবিত্র রমজানের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য যেন বহাল থাকে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। নগরবাসীর নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, যানজট নিরসন, শহরের পরিচ্ছন্নতা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং, রাস্তা ও ফুটপাত চলাচলের উপযোগী রাখা, নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ ও পানির সরবরাহ বিশেষ করে সেহরী ইফতার ও তারাবীহর সময়ে, এই বিষয়গুলোতে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব।

 

 

 

সিলেট সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, পুলিশ-র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষসহ সকল দপ্তর একযোগে কাজ করবে। ব্যবসায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেনো সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। দোকান ও মার্কেটগুলোতে দ্রব্যমূল্যের তালিকা স্থাপন করবেন।

 

 

 

 

গরু, মহিষ, খাসী, ভেড়া ও মুরগীর মাংস নির্ধারিত দামে বিক্রি করবেন। ভেজালমুক্ত খাবার বিক্রি করবেন। রমজান মাসে সিটি কর্পোরেশন নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে। ধর্মীয় ও সামাজিক দিক বিবেচনায় হোটেল ও রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের সঠিক সময়ে তাদের প্রতিষ্ঠান খোলা ও বন্ধ রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। সিলেট আধ্যাত্মিক নগরী। তাই মাহে রমজানের পবিত্রতা বজার রাখার স্বার্থে সিনেমার পোষ্টার লাগানো, অযথা মাইকিং ও আপত্তিকর বিজ্ঞাপন প্রচার থেকে বিরত থাকা উচিৎ।

 

 

 

 

খান মো. রেজা-উন-নবী আরো বলেন, ছোটবেলায় পড়েছিলাম কেয়ামতের আগে নাকি ফুলে সুগন্ধ থাকবে না, ফলে কোনো স্বাদ থাকবে না। এখানে একজন বললেন, এখন নাকি চিনিতে পিপড়া বসে না। অর্থাৎ চিনিতেও ভেজাল। আপনারা খেয়াল করে দেখবেন অনেক ফুলের গন্ধ নাই। অনেক ফলমূলের স্বাদ কমে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন শুধু নিজেকেই ভালোবাসে। স্যোশাল মিডিয়ার একটা জগৎ তৈরি হয়েছে, সেখানে সবাই সবার বন্ধু।

 

 

 

প্রকৃতপক্ষে কি সবাই সবার বন্ধু হতে পারে? আপনার কাছের মানুষ যদি আপনার বন্ধু হতে না পারে, আপনি যদি তাদের ভালো না বাসতে পারেন তাহলে এই হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ র্ভাচুয়াল বন্ধু থাকার কোনো মূল্য নেই। দিন শেষে আপনাকে পৃথিবীর বাস্তবতায় ফিরতে হবে। যদি আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে যদি শান্তি সৃষ্টি করতে পারি তাহলে আমাদের জীবন শান্তিময় হবে।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।