সিলেটের এসপি’র ডাকে সাড়া দিলেন না হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল আহমদ।
       
খুঁজুন                
                               
সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

সিলেটের এসপি’র ডাকে সাড়া দিলেন না হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল আহমদ।

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ
সিলেটের এসপি’র ডাকে সাড়া দিলেন না হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল আহমদ।

সিলেটের এসপি’র ডাকে সাড়া দিলেন না হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল আহমদ। সোমবার হরিপুর মাদ্রাসায় কয়েক হাজার তৌহিদী জনতার সমাবেশে জানিয়ে দিলেন- ‘সিলেটের এসপি ডাকলে আমি একা যেতে পারি না। প্রয়োজনে এসপিকে মুরুব্বিদের কাছে আসতে হবে।’ এক সপ্তাহ ধরে উত্তাল পূর্ব সিলেট। আলেম-ওলামাদের নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে মুখোর জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাটের আলেম সমাজ। সঙ্গে তৌহিদী জনতাও। তাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একের পর এক কটূক্তি করে স্ট্যাটাস। সর্বশেষ তারা সোমবার সকালের মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন। ওখানেও কটূক্তিকারীরা উপস্থিত না হওয়ায় দুপুরে সিলেটের হরিপুর মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সমাবেশ করে নতুন করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। নতুবা বৃহস্পতিবার থেকে বৃহত্তর জৈন্তা অবরোধ করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আলেম সমাজের নেতৃবৃন্দ।

 

 

 

 

অভিযোগের তীর জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের দিকে। তবে জামায়াতের নীতিনির্ধারক পর্যায় থেকে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্য কোনো মন্তব্য আসেনি। ঘটনার সূত্রপাত ৩০শে ডিসেম্বর। এ দিন জামায়াতের কর্মী পরিচয়দানকারী এক ব্যক্তি গাছবাড়ি বড়দেশ উত্তর এলাকার বাসিন্দা জামাল হুসাইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হযরত শেখ আব্দুল্লাহ (রহ.) হরিপুরীকে নিয়ে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেন। ওই স্ট্যাটাসে তিনি তার শ্বশুর আল্লামা প্রিন্সিপাল শফিকুল হক বুলবুলকে নিয়ে মন্তব্য করার কড়া সমালোচনা করেন। একইসঙ্গে তিনি সিলেটের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা আব্দুল্লাহ হরিপুরী (রহ.) ও তার ছেলে মাদ্রাসার বর্তমান প্রিন্সিপাল মাওলানা হেলাল আহমদকে নিয়ে কটাক্ষ করেন।

 

 

 

এর আগে ২৯শে ডিসেম্বর দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলে ‘হুদ মাওলানা’ নাম উল্লেখ করে অতীত কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছিলেন মাওলানা হেলাল আহমদ। এর আগে শতবর্ষী এক আলেমের বক্তব্যকে ঘিরে দু’পক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে ছিলেন।

 

 

 

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জামাল হুসাইনের মন্তব্যের পর ক্ষোভ দেখা দেয় পূর্ব সিলেটের হরিপুরে। স্ট্যাটাসের প্রতিবাদে হরিপুরের আলেম-ওলামারাসহ স্থানীয় জনতা রাতেই সিলেট-তামাবিল সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় কটূক্তিকারীদের দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসায় গিয়ে আলেম-ওলামাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার নিঃশর্ত দাবি জানান। এরপরও হরিপুর মাদ্রাসা ও দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসার আলেম-ওলামাদের উদ্দেশ্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেয়া হয়। আর এই স্ট্যাটাসে ক্ষুব্ধ আলেম-ওলামাদের মধ্যে আরও ক্ষোভ দেখা দেয়। এই ক্ষোভের অংশ হিসেবে কয়েক দফা হরিপুর মাদ্রাসায় বৈঠক হয়। এ বৈঠকে পূর্ব সিলেটের আলেম-ওলামারা অংশ নেন।

 

 

তারা ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে আলেম-ওলামাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। আলেম-ওলামাদের দাবি- যতই তাদের ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে ততই তারা নানাভাবে আলেম-ওলামাদের নিয়ে কটূক্তি অব্যাহত রেখেছে। যারা এসব করেছে তারা কোনো না কোনোভাবে জামায়াতের রাজনৈতিক ধারার ব্যক্তি। বিষয়টি জামায়াত নেতারা অবগত থাকলেও তারা নীরব রয়েছেন। এদিকে- হরিপুরসহ কয়েকটি মাদ্রাসা কয়েক হাজার ছাত্র-শিক্ষক রোববার দুপুরে দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসায় যান। মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে আলেম-ওলামারা সমাবেশ করেন। সমাবেশ থেকে তারা ঘোষণা দেন সোমবার সকালের মধ্যে কটূক্তিকারীরা এসে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা এবং আলেম সমাজের মাধ্যমে তওবা না করলে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তাদের এই আল্টিমেটামেও কেউ সাড়া দেয়নি। এর প্রেক্ষিতে সোমবার সকালে দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসাসহ কয়েকটি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তৌহিদী জনতা মিছিল সহকারে এসে হরিপুর মাদ্রাসায় উপস্থিত হন। এ সময় তারা কটূক্তিকারীদের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামের ইন্ধন রয়েছে দাবি করে স্লোগানও দেন। বেলা ১১টায় দারুল উলুম কানাইঘাট মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম শায়খুল হাদীস আলিম উদ্দিন দুর্লভপুরী, শায়খুল হাদীস আব্দুল কাদির বাগরখলী ও হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল আহমদের উপস্থিতিতে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে হরিপুরের ব্যবসায়ীসহ জৈন্তাপুর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

 

 

সমাবেশে বক্তারা বলেন- পূর্বের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও কটূক্তিকারী আলেম-ওলামাদের সামনে এসে হাজির হয়ে ক্ষমা চাননি। উপরন্তু সিলেটের পুলিশ সুপার হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল আহমদকে তার অফিসে ডেকেছেন। এতে পুলিশ সুপার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন বলে জানান তারা।

 

 

 

বক্তারা বলেন- ঘটনার সমাপ্তি আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে আলেম-ওলামাদের কাছে এসে শেষ করতে হবে। নতুবা বৃহস্পতিবার থেকে বৃহত্তর জৈন্তা অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে। সমাবেশের খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন সিলেটের সাবেক মেয়র ও বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।

 

 

 

সমাবেশে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি আলেম- ওলামাদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন। একইসঙ্গে তিনি সিলেটের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়ে এসেছেন। আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন- বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন। প্রশাসনের তরফ থেকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করবেন।

 

 

 

এ ব্যাপারে জৈন্তাপুরের হরিপুর মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল আহমদ জানিয়েছেন- আলেম-ওলামাদের নিয়ে কটূক্তি করার কারণে আলেম-ওলামারাসহ বৃহত্তর জৈন্তার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়েছে। আমরা মনে করছি বিষয়টির ইন্ধনদাতা জামায়াতের কতিপয় নেতাকর্মী। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে কুৎসা রটনা করেই যাচ্ছে। যদি কটূক্তিকারীরা এসে প্রকাশ্যে ক্ষমা ও তওবা না করে তাহলে ঘোষিত আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন আলেম সমাজ ও তৌহিদী জনতা।

 

 

তবে ঘটনাটির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন। তিনি জানিয়েছেন- জামায়াতের কেউ মন্তব্য করছে না, স্ট্যাটাসও দিচ্ছে না। এ কারণে ঘটনাটি নিয়ে সিলেট জামায়াতে ইসলামী নীরব রয়েছে।

 

 

জৈন্তাপুর থানার ওসি আবুল বাশার মো. বদিউজ্জামান জানিয়েছেন- এ ঘটনায় পুলিশের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি পুলিশের তরফ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।