আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে-আহমদ হাসান ফুলতলী
       
খুঁজুন                
                               
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে-আহমদ হাসান ফুলতলী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ
আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে-আহমদ হাসান ফুলতলী

জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংবিধান সংস্কার : আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট একটি দেশ। ঐতিহাসিক ও ধর্মতাত্ত্বিক দিক থেকে এদেশে ইসলাম সুপ্রতিষ্ঠিত।

 

তাই এদেশের সংবিধানে ইসলামকে নৈতিক দিকনির্দেশনার ভিত্তি হিসাবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বহাল রাখার পাশাপাশি কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থি কোনো আইন প্রণয়ন না করার বিষয়টিও সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

 

বক্তারা আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪) জাতীয় প্রেসক্লাবে বালাকোট-চেতনা উজ্জীবন পরিষদের উদ্যোগে ‘সংবিধান সংস্কার: আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন।

 

পরিষদের আহবায়ক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খানের সভাপতিত্বে ও বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মোহাম্মদ নজমুল হুদা খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুপ্রিমকোর্টের মাননীয় বিচারপতি সৈয়দ এ.বি. মাহমুদুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সদস্য সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এরফোর্ট ইউনিভার্সিটি, জার্মানি’র পিএইচডি গবেষক মারজান আহমদ চৌধুরী ফুলতলী।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি সৈয়দ এ.বি. মাহমুদুল হক বলেন, এদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুসলমান। আমিও ব্যক্তিগতভাবে ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পরিবারের সন্তান। আমাদের পূর্বপুরুষ ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত ছিলেন। তাই ইসলামের প্রতি আমাদের হৃদয়ের টান রয়েছে। তিনি মূল প্রবন্ধে উপস্থাপিত প্রস্তাবসমূহকে সুন্দর আখ্যায়িত করে বলেন, সংবিধান সংস্কারাধীন রয়েছে। এতে আমরা অনেক ভালো কিছু প্রত্যাশা করি।

 

মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলী বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ইতিহাসের নানা বাঁক অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। ইতিহাস সাক্ষী, এদেশের মানুষ সময়ে সময়ে শোষণ, বঞ্চণা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে সাহসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লব ইতিহাসের সে ধারারই অংশ। জুলাই বিপ্লবের পর নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের সংস্কার ও উন্নয়নে নানা প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সংবিধান সংস্কারের জন্য গঠন করেছেন ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন’।

 

এ কমিশন দেশের সকল নাগরিকের নিকট থেকে সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রস্তাব আহ্বান করেছে। সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা হযরত সায়্যিদ আহমদ শহীদ বেরলভী (র.) এর বিপ্লবী চেতনা উজ্জীবনের লক্ষ্যে গঠিত ‘বালাকোট চেতনা উজ্জীবন পরিষদ’ এর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে গত ২৩ নভেম্বর ১৯ দফা প্রস্তাব পেশ করেছি। আমাদের দাবি, সংবিধানে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে, আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে এবং শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষাকে বাধ্যতামূলকভাবে অন্তর্ভুক্ত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী, হিযবুল্লাহ জমিয়াতুল মুছলিহীনের আমীর মাওলানা মুহাম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী, চরমোনাই আহছানাবাদ রশিদীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, ইসলামি শিক্ষা উন্নয়ন বাংলাদেশ এর সভাপতি ড. এ কে এম মাহবুবুর রহমান, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রূহুল আমীন, বিশিষ্ট আলিমে দ্বীন মুফতী আবু নছর জিহাদী, মহাখালী দারুল উলূম হোসাইনিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আল মারুফ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক সভাপতি ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুল হক, দারুল ফিকর ওয়াল ইফতা আল-ইসলামী বাংলাদেশ’র সদস্য সচিব মাওলানা আবু সালেহ মুহাম্মদ কুতবুল আলম, মাসিক পরওয়ানা’র সম্পাদক মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, মালয়েশিয়ার পোস্ট ডক্টোরাল ফেলো ড. ফয়জুল হক, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ এস এম মনোয়ার হোসেন।

সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. শহিদুল হক, গোড়ান নাজমুল হক কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা এমরানুল হক, মোহাম্মদপুর গাউসিয়া ফাযিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা আ. ন. ম. মাহবুবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ গোপালদী কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা এবিএম আব্দুস সালাম, বঙ্গভবন জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সাইফুল কবির, বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া ঢাকা মহানগর সভাপতি ইমাদ উদ্দীন তালুকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ইকরাম কুতুবি, সাধারণ সম্পাদক আহমদ রায়হান ফারহি, জার্মানি বার্লিনের বাইতুল মুকাররামের খতিব মাওলানা হেলাল উদ্দীন সিরাজী, শাহনুর প্রপার্টিজ লিমিটেডের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার নাইমুল হক খান প্রমুখ।

 

মূল প্রবন্ধে সংবিধান সংস্কারে ১৯ দফা প্রস্তাব পেশ করা হয়। এর মধ্যে- সংবিধানের প্রস্তাবনায় “সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্ব” ও ইসলামকে নৈতিক দিকনির্দেশনার ভিত্তি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বহাল রাখা, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র বিলোপ, কুরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থি কোনো আইন প্রণয়ন না করা, আলিম-উলামা ও ইসলামী আইনজ্ঞদের সমন্বয়ে ‘ইসলামিক আইডোলজি কাউন্সিল’ গঠন করা, এলজিবিটিকিউ বা ট্রান্সজেন্ডারের মতো বিষয় অধিকার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত না করা, মুসলমানদের বিবাহ, তালাক, উত্তরাধিকার ও অন্যান্য পারিবারিক বিষয় পূর্ণরূপে ইসলামী নীতি অনুসারে পরিচালনার স্বীকৃতি প্রদান, জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন, পাঠ্যক্রমে বাধ্যতামূলক ইসলামী শিক্ষা অন্তর্ভুক্তি, ইসলামী অর্থনীতি ও শ্রম অধিকার বাস্তবায়ন, সুদমুক্ত ব্যাংক ব্যবস্থা প্রবর্তন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানসহ ধর্মীয় ও জনগুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব রয়েছে।প্রস্তাবসমূহ উল্লেখ করার সাথে সাথে এগুলোর ঐতিহাসিক ও ধর্মতাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে অন্যান্য দেশের আইন, সংবিধান ও প্রাসঙ্গিক বিষয়ের উদাহরণও আনা হয়েছে। “সর্বশক্তিমান আল্লাহর নিরঙ্কুশ সার্বভৌমত্ব” এর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, মৌরতানিয়া, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের সংবিধানে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস অনুযায়ী স্রষ্টার সার্বভৌমত্বের কথা বিভিন্ন পরিভাষায় প্রযুক্ত হয়েছে। রাষ্ট্রধর্মের কথাও মালয়েশিয়া, তিউনিসিয়া, ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড-এর সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।