আ’লীগ নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে: বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ


ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে ভারতের পরিকল্পনায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা ষড়যন্ত্রে করছেন বলে অভিযোগ করেছেন সদ্য গঠিত ছাত্র সংগঠন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এমন অভিযোগ করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে সাইয়েদ কুতুব বলেন, আমরা যে মাটিতে দাঁড়িয়ে আছি এ মাটিতে এখন শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের তাজা রক্ত লেগে আছে। এ মাটিতে ফ্যাসিবাদী ও ফ্যাসিবাদীদের দোসরদের কোনো জায়গা হবে না। তাদেরকে পুনর্বাসনের সব ষড়যন্ত্র রুখতে ছাত্র-জনতার পাশে সর্বস্তরের জনগণ আছে এবং থাকবে।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক হাসান আরিফ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে ও রাজনৈতিক অধিকার দিতে ক্রমাগতভাবে বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক হয়ে আসিফ নজরুল কীভাবে ফ্যাসিবাদের পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন এ প্রশ্ন রেখে তাকে অবিলম্বে অপসারণে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি। গত ১৭ বছর আওয়ামী ফ্যাসিবাদের হাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, জীবন দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের লোকেরা। অথচ নিজ কর্মীদের আত্মত্যাগ, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ এবং গণদাবি উপেক্ষা করে মির্জা ফখরুল এবং ডা. শফিক আওয়ামী লীগকে পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা বলছেন। আওয়ামী লীগের দালালি করায় মির্জা ফখরুল ও ডা. শফিককে দলীয় পদ থেকে সরাতে বিএনপি ও জামায়াতের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমন্বয়ক গালিব ইহসান বলেন, অনতিবিলম্বে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জুলাই বিপ্লবের শহীদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারির জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। যদি ক্ষমা না চায় তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে তার নাম মুছে ফেলতে হবে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, ফ্যসিবাদীরা যদি আপনার পরিবারের লোক হয়ে থাকে তাহলে বাংলার মাটিতে ফ্যাসিবাদ কায়েমের নীলনকশার সঙ্গে আপনিও জড়িত। অনতিবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে জামায়াতের আমিরের পদ থেকে পদত্যাগ করুন।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, এদেশে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন হবে কি হবে না, আওয়ামী লীগের রাজনীতি থাকবে কি থাকবে না সেটা ৫ আগস্ট ছাত্র জনতাই ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে। আমাদের ছাত্রজনতার শেষ রক্তবিন্দু থাকতে আওয়ামী লীগ এদেশে আর মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের উদারতার অংশ হিসেবে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। তিনি ভারত থেকে শেখ হাসিনাকেও দেশে ফিরিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু হাসিনার ফেরার পরপরই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া হত্যার শিকার হন। এরপরও বিএনপি কীভাবে জুলাই গণহত্যার পরেও আওয়ামী লীগকে ভোটের রাজনীতিতে আনতে চায়। তাদের এ দুঃসাহস দেখে আমাদের লজ্জা হয়, রক্ত গরম হয়ে যায়।
সমাবেশ শেষে রাজু ভাস্কর্য থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতের দালালেরা-হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘হাসিনা গেছে যে পথে-ফখরুল যাবে সে পথে’, ‘হাসিনা গেছে যে পথে-ডা. শফিক যাবে সে পথে’, ‘হাসিনা গেছে যে পথে-আসিফ নজরুল যাবে সে পথে’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন