সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটিকে ‘পুতুল কমিটি’ বললেন আরিফ!
       
খুঁজুন                
                               
রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটিকে ‘পুতুল কমিটি’ বললেন আরিফ!

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৪, ১০:০১ অপরাহ্ণ
সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটিকে ‘পুতুল কমিটি’ বললেন আরিফ!

সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বলেছেন, ‘কমিটিগুলো এক ব্যক্তি বিশেষের পকেটের পুতুল কমিটি হলে ছেড়ে দেওয়া হবে না। আমরা ভেসে আসিনি।’ তার এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ভাইরাল হয়েছে সামাজিকমাধ্যমে। তোলপাড় চলছে। এতে হতবাকও হয়েছেন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা।

বুধবার (৬ নভেম্বর) সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভা ও জুলাই বিপ্লবে চিকিৎসা সেবার অবদানের জন্য চিকিৎসক ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এমন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আরিফ। ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), সিলেট জেলা শাখা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ড্যাব সিলেটের সভাপতি ডা. মো. নাজমুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার।

ওই অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠালগ্নের একজন। শুরু থেকে দলে আজকে এই পর্যায়ে এসেছি। কিন্তু জাসদ, আওয়ামী লীগ, বাসদ, ন্যাপ-ট্যাপের হায়ার করা সদস্যদের কাছে যারা-ছাত্রদল থেকে এই পর্যন্ত এসেছে তারা হয়ে গেছে বিষফোঁড়া।


তিনি বলেন, ‘আমরা জীবনে সবপর্যায়ে কত বছর জেল খেটেছি সেগুলো বলার দরকার নাই। কিন্তু এখন যে কমিটিগুলো হচ্ছে তা যদি এক ব্যক্তিবিশেষের পকেটের পুতুল কমিটি হয় তাহলে এটিকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।’ ক্ষুব্ধ আরিফ বলেন, ‘এতদিন বলিনি, কিন্তু এখন মুখ খুলে বলব। ভেসে আসি নাই আমরা।’

দলকে পকেটস্থ করতে চাওয়াদের ধিক্কার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা দলকে এভাবে পকেটস্থ করতে চায়, যারা জাসদ করে, কর্নেল তাহেরের গ্রুপ করে জিয়াউর রহমানের চামড়া দিয়ে জুতা বানাতে চাইত-তারাই এখন জাতীয়তাবাদী দলে প্রেসক্রিপশন করে কে কোথায় নেতৃত্ব দেবে-ধিক্কার দেই এসব কাজকে।’

মুখ বুঝে বসে থাকার দিন শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গণবাহিনীর নেতা, জাসদ করেছেন আর বিএনপিকে এখন প্রেসক্রিপশন দেবেন-কে হবে এখানের নেতা? আমরা আর মুখ বুঝে বসে থাকব না।’

দুর্দিনের সৈনিকদের খবর কয়জনে নিয়েছেন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘ইলিয়াস আলীসহ অনেকে গুম হয়েছেন। কয়জনের খবর আমরা নিয়েছি? আজকে কোথা থেকে একেকজন আসছে, ব্যবসায়ী ধরে ধরে নিয়ে আসছেন, প্রশাসনিক আমলাদের ধরে ধরে নিয়ে আসছেন আর উনারা এখন বসেছেন-কে হবেন সিনিয়র সচিব, কে হবেন পরবর্তী সরকারের পিএস। আরে ভাই গভমেন্ট করা তো দূরের কথা, আগে দল সংগঠন করেন।’

দলে ঘাপটি মেরে থাকা সুবিধাবাদিদের বিরুদ্ধে কথা বলে যাবেন জানিয়ে আরিফুল হক বলেন, ‘আমি গত মঙ্গলবার স্ট্যান্ডিং কমিটির অনেক নেতাদের সোজাসুজি বলে এসেছি-যদি আপনারা এগুলো শুদ্ধ না করেন, দল আমরা করেছি, দলে থেকেই দলের ভেতরে ঘাপটি মারাদের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলবই। নিশ্চয়ই নেতার কানে আমরা পৌঁছানোর চেষ্টা করব। ’

হাসিনা সরকারের পতন হলেও এখনো শঙ্কা কাটেনি মন্তব্য করে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমরা যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছি-আমরা কি শঙ্কামুক্ত? প্রশ্নটা আমার এখানে। দ্বিতীয়ত আমাদের ভাবটা এমন হয়ে গেছে যে আমরা ক্ষমতায় চলে এসেছি। কিন্তু বুঝা উচিত এখন দিল্লি বহুদূর।’

দলের ভেতর বৈষম্য দূর হয়েছে কিনা প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা আজকে কথা বলার স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু দলের মধ্যে থেকে বৈষম্য দূর হয়েছে কি?’ কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘দলের এখনো যে বৈষম্য আছে তার বিরুদ্ধে আপনারা কি অবস্থান নেবেন, কারণ আমরা মফস্বলে থাকি। মফস্বল থেকে কেন্দ্রের যারা নেতৃত্বে দিচ্ছেন তাদের এটি দেখতে হবে।’

খোলস বদলকারীদের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে আরিফুল হক বলেন, ‘আজ থেকে কিছুদিন আগেও যাদের দেখিনি পটপরিবর্তনের পর তাদের খোলস পরিবর্তন হয়েছে। তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতায় লেগেছি, অথচ যারা মাঠে ময়দানে আন্দোলন করল, যারা চলে গেল, যারা নির্যাতিত হলো, যারা আজও মামলায় হাজিরা দিতে দিতে জীবন শেষ করে ফেলছে তাদের প্রতি আমরা কতটুকু দায়িত্ব পালন করেছি সেটা আমাদের চিন্তা করা দরকার।’

রাজপথের সৈনিকদের মূল্যায়ন হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা ১০ বছর চাকরিতে পাননি তাদের এখন কয় ধাপ প্রমোশন দিয়ে কোন পদে বসাবো তাতে ব্যস্ত আমরা। দলের যারা মাঠে ময়দানে কাজ করেছে, তাদের কি অবস্থায় রেখেছেন?’

তিনি কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি সবাই শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক, আর সবাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের এই আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করছেন। তারা আবার সেই ইস্ত্রি করা স্যুট-কোর্ট পরে ব্যস্ত। অবস্থা এমন যেন যারা রাজপথে ছিলে তারা এখন চলে যাও।’

সিলেট মহানগর বিএনপির কাউন্সিলের ২০ মাস পর ঘোষণা করা হয়েছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে ১৭০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে ২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক পদে এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন। গত জুলাইয়ে নাসিম হোসাইনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে আবারও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।