আমেরিকার ভোটাররা প্রার্থী-প্রেমী নাকি দলকানা


শতাধিক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্যতম দুই দল ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে। এইবারের ৬০তম নির্বাচনেও এই ধারায় কোন পরিবর্তন আসতে দেখা যায়নি। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাড্ডহাড্ডি লড়াইটা এই দু’জন বা দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এই দুই দলের কট্টর সমর্থকের সংখ্যা প্রায় সমান এবং তারাই দেশটির ভোট ব্যাংকের সিংহভাগ দখল করে রয়েছেন। প্রভাবশালী এই দুই প্রার্থীর সমর্থক ছাড়াও অন্য চার প্রার্থীর সামান্য কিছু নেতাকর্মী এবং সমর্থক রয়েছে। এসব প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তো দূরের কথা তাদের দল বা ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলতে পারবেন এমন মার্কিন ভোটার খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রধান দুই দলের কট্টর সমর্থকদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে গণনা করা চ্যালেঞ্জিং। তবে কিছু জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান দুই দলেরই কট্টর সমর্থক সমান যা ২৫-৩০ শতাংশ।
এদিকে, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন ভোটাররা সাধারণত প্রার্থীর যোগ্যতা অথবা দলীয় গৌরব দুই বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। তবে ভোটারদের মনোভাব এবং তাদের ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।
প্রার্থীর যোগ্যতা: অনেক ভোটারই প্রার্থীর নেতৃত্বের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতার ওপর বেশি নজর দেন।
অনেক ক্ষেত্রে ভোটাররা তাদের জীবন-জীবিকা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা এবং বিষয়ের প্রতি প্রার্থীর মনোযোগ বিবেচনায় রাখেন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে প্রার্থীর পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি ভোটারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে, দলের গৌরবকে বিবেচনায় নিয়ে অনেক ভোটার তাদের সমর্থন জানিয়ে থাকেন। তারা দলীয় গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতি আস্থাশীল থাকতে পছন্দ করেন।
দলকানা সমর্থক: কিছু ভোটার রয়েছেন যা দলের মনোনীত যেকোন প্রার্থীর প্রতি অগাধ আস্থা দেখিয়ে থাকেন। পছন্দের দলের টিকিটে যে প্রার্থীই দাঁড়াক, তারা দলীয় সমর্থনের কারণে তাকে ভোট দিয়ে থাকেন। এই বিশেষ কারণে কট্টর সমর্থকরা প্রার্থীর যোগ্যতার চেয়ে দলের পরিচিতি ও ঐতিহ্যকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
সবশেষ বলা চলে, মার্কিন ভোটারদের মধ্যে একটি মিশ্র মনোভাব রয়েছে যাদের সুয়িং বা দোদুল্যমান ভোটার বলা হয়ে থাকে। নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি, প্রার্থী এবং দলের ইশতিহার সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তারা যেকোন মুহূর্তে মত বদল করেন এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে যেকোন প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে থাকেন।
আন্তর্জাতিক
আমেরিকার ভোটাররা প্রার্থী-প্রেমী নাকি দলকানা

মোশফেকুর রহমান, সিনিয়র সাব-এডিটর
প্রকাশিত : ২১:০৫, ০৫ নভেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ২২:১০, ০৫ নভেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের ভোটার। ফাইল ছবি: রয়টার্স
শতাধিক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্যতম দুই দল ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে। এইবারের ৬০তম নির্বাচনেও এই ধারায় কোন পরিবর্তন আসতে দেখা যায়নি। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাড্ডহাড্ডি লড়াইটা এই দু’জন বা দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এই দুই দলের কট্টর সমর্থকের সংখ্যা প্রায় সমান এবং তারাই দেশটির ভোট ব্যাংকের সিংহভাগ দখল করে রয়েছেন।
প্রভাবশালী এই দুই প্রার্থীর সমর্থক ছাড়াও অন্য চার প্রার্থীর সামান্য কিছু নেতাকর্মী এবং সমর্থক রয়েছে। এসব প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তো দূরের কথা তাদের দল বা ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলতে পারবেন এমন মার্কিন ভোটার খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রধান দুই দলের কট্টর সমর্থকদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে গণনা করা চ্যালেঞ্জিং। তবে কিছু জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান দুই দলেরই কট্টর সমর্থক সমান যা ২৫-৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন : মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেন ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানের মধ্যে সীমাবদ্ধ, অন্য প্রার্থী কেন পাত্তা পান না
এদিকে, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন ভোটাররা সাধারণত প্রার্থীর যোগ্যতা অথবা দলীয় গৌরব দুই বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। তবে ভোটারদের মনোভাব এবং তাদের ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।
প্রার্থীর যোগ্যতা: অনেক ভোটারই প্রার্থীর নেতৃত্বের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতার ওপর বেশি নজর দেন।
অনেক ক্ষেত্রে ভোটাররা তাদের জীবন-জীবিকা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা এবং বিষয়ের প্রতি প্রার্থীর মনোযোগ বিবেচনায় রাখেন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে প্রার্থীর পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি ভোটারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে, দলের গৌরবকে বিবেচনায় নিয়ে অনেক ভোটার তাদের সমর্থন জানিয়ে থাকেন। তারা দলীয় গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতি আস্থাশীল থাকতে পছন্দ করেন।
দলকানা সমর্থক: কিছু ভোটার রয়েছেন যা দলের মনোনীত যেকোন প্রার্থীর প্রতি অগাধ আস্থা দেখিয়ে থাকেন। পছন্দের দলের টিকিটে যে প্রার্থীই দাঁড়াক, তারা দলীয় সমর্থনের কারণে তাকে ভোট দিয়ে থাকেন। এই বিশেষ কারণে কট্টর সমর্থকরা প্রার্থীর যোগ্যতার চেয়ে দলের পরিচিতি ও ঐতিহ্যকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
মুক্তমনা ও স্বাধীনচেতা ভোটার: অল্প সংখ্যক ভোটার রয়েছেন যারা বিশেষ কোনো দলের প্রতি অন্ধ সমর্থন বা পূর্ণ আস্থা দেখান না। তাদের ভোটের সিদ্ধান্ত প্রার্থীর যোগ্যতার ওপর বেশি নির্ভর করে।
পক্ষপাতদুষ্ট ভোটার: যেসব ভোটার একটি নির্দিষ্ট দলের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ, তারা সাধারণত দলের গৌরবকে বেশি গুরুত্ব দেন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে প্রার্থীর যোগ্যতা তাদের জন্য ততটা গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে।
সবশেষ বলা চলে, মার্কিন ভোটারদের মধ্যে একটি মিশ্র মনোভাব রয়েছে যাদের সুয়িং বা দোদুল্যমান ভোটার বলা হয়ে থাকে। নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি, প্রার্থী এবং দলের ইশতিহার সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তারা যেকোন মুহূর্তে মত বদল করেন এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে যেকোন প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে থাকেন।
নির্বাচনে অন্য প্রার্থীরা কেন পাত্তা পান না: দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সাধারণত ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। এই দুই রাজনৈতিক দল কয়েক’শ বছর ধরে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। দুই দলেরই শক্তিশালী সাংগঠনিক সক্ষমতা, অর্থ-সম্পদ ও সমর্থন-ব্যবস্থা রয়েছে যা তৃতীয় কোন ছোট দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে অর্জন করা প্রায় অসম্ভব।
দুই দলের ভোটের শতাংশ : ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টি বিগত কয়েকটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পেয়েছে তার একটি সারসংক্ষেপ দেয়া হলো। ২০২০ সালের নির্বাচনের জো বাইডেন (ডেমোক্রেট) পেয়েছেন ৫১.৩ শতাংশ আর ডোনাল্ড ট্রাম্প (রিপাবলিকান) ৪৬.৮ শতাংশ পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের (ডেমোক্রেট) চেয়ে ২ শতাংশ কম ভোট পেয়েও ইলেকটোরাল ভোটে জিতে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প (৪৬.২ শতাংশ)। হিলারি ক্লিনটন পেয়েছিলেন ৪৮.২ শতাংশ ভোট। ২০১২ সালের নির্বাচনে বারাক ওবামা (ডেমোক্রেট) ৫১.১ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। অন্যদিকে মিট রমনি (রিপাবলিকান) ৪৭.২ শতাংশ ভোট পান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বারাক ওবামা (৬৮.৩ শতাংশ) বিপুল ভোটের ব্যবধানে
জন ম্যাককেইনকে (রিপাবলিকান) পরাজিত করে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে তার জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা নামে। এতে ধারণা করা যায়, প্রার্থীর কর্মকাণ্ড কিভাবে ভোটারকে প্রভাবিত করে।
এবারের ৬০তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হচ্ছেন ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাড্ডহাড্ডি লড়াইটা এই দু’জন বা দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন গণতান্ত্রিক এই দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট শহর নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিক্সভিল নচ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ‘ভাগ্য নির্ধারণী’ হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রটিতে মাত্র ছয়জন নিবন্ধিত ভোটার। ১০ মিনিটের মধ্যেই তাদের ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। প্রত্যেকে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যান। এবং সঙ্গে সঙ্গে ফলাফলও প্রকাশ করা হয়। ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হবার লড়াইয়ে মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প সমান তিনটি করে ভোট পেয়েছেন।
এই নির্বাচনে প্রভাবশালী এই দুই প্রার্থী ছাড়াও অন্য চার প্রার্থী রয়েছেন। তবে তাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তো দূরের কথা তাদের দল বা ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলতে পাবরে এমন মার্কিন নাগরিক কয়জন আছেন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
এই চারজনের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৭৪ বছর বয়সী জিল স্টেইন। এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়েছিলেন তিনি। তবে নির্বাচন আশানুরূপ ফল না পেলেও তিনি ওই দুই নির্বাচনে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ও শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করে ভোট পেয়েছিলেন।
গ্রিন পার্টি থেকে জিল স্টেইন ছাড়াও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন কর্নেল ওয়েস্ট। বর্ণবাদবিরোধী ৭১ বছর বয়সী এ শিক্ষাবিদ বাইডেনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ ও ট্রাম্পকে ‘নব্য ফ্যাসিস্ট’ বলে মনে করেন। লিবার্টারিয়ান পার্টি ২০২০ সালের নির্বাচনে ১ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছিল।
এবারের নির্বাচনে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আলোচিত প্রার্থী রবার্ট কেনেডি জুনিয়র। তার পক্ষে এবারের নির্বাচনে ৫–৭ শতাংশ সমর্থন ছিল। কিন্তু আগস্টে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
যেসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ভোটারের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে বরাবরের মতোই কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প রয়ে গেছেন তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
দুই-দলীয় ব্যবস্থা: দেশটির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে দুই-দলীয় ব্যবস্থা চালু রয়েছে যা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধুমাত্র প্রভাবশালী এই দুই দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে বাধ্য করে। এই ব্যবস্থায় ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টিই সাধারণত একে অপরের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে নতুন বা ছোট দলগুলোর পক্ষে প্রচারণা ও সমর্থন গড়ে তোলা অনেক কঠিন।
বিপুল সম্পদ: নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং সারা দেশের ৫১টি অঙ্গরাজ্যে প্রচারণা চালানোর জন্য বিপুল পরিমাণের অর্থের প্রয়োজন হয়। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টিই তাদের সমর্থকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করতে পারে। ছোট দল বা স্বাধীন/স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে এ ধরনের তহবিল সংগ্রহ করা কঠিন।
প্রথম স্থান নির্ধারণী নির্বাচন ব্যবস্থা (উইনার টেকস অল): বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যেই প্রথম স্থান নির্ধারণী নির্বাচন ব্যবস্থা (উইনার টেকস অল) পদ্ধতি মেনে চলা হয়, যেখানে প্রথম স্থানে থাকা প্রার্থী অঙ্গরাজ্যের সব ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে যান। এতে করে দ্বিতীয় বা পরবর্তী অবস্থানে থাকা প্রার্থীরা শূন্য হাতে ফেরেন। এই ব্যবস্থায় অপেক্ষাকৃত দূর্বল বা ছোট দলগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে যায় তৃতীয় শক্তি বা বিকল্প ধারার দল হিসেবে ভোটারের সমর্থন চাওয়া বা আদায় করে নেয়া। সেই সঙ্গে নিজেকে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে উপস্থিত করা সম্ভবপর হয় না।
আন্তর্জাতিক
আমেরিকার ভোটাররা প্রার্থী-প্রেমী নাকি দলকানা

মোশফেকুর রহমান, সিনিয়র সাব-এডিটর
প্রকাশিত : ২১:০৫, ০৫ নভেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ২২:১০, ০৫ নভেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের ভোটার। ফাইল ছবি: রয়টার্স
শতাধিক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা অন্যতম দুই দল ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে। এইবারের ৬০তম নির্বাচনেও এই ধারায় কোন পরিবর্তন আসতে দেখা যায়নি। প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হচ্ছেন ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাড্ডহাড্ডি লড়াইটা এই দু’জন বা দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। এই দুই দলের কট্টর সমর্থকের সংখ্যা প্রায় সমান এবং তারাই দেশটির ভোট ব্যাংকের সিংহভাগ দখল করে রয়েছেন।
প্রভাবশালী এই দুই প্রার্থীর সমর্থক ছাড়াও অন্য চার প্রার্থীর সামান্য কিছু নেতাকর্মী এবং সমর্থক রয়েছে। এসব প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তো দূরের কথা তাদের দল বা ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলতে পারবেন এমন মার্কিন ভোটার খুঁজে পাওয়া কঠিন। প্রধান দুই দলের কট্টর সমর্থকদের সংখ্যা সুনির্দিষ্টভাবে গণনা করা চ্যালেঞ্জিং। তবে কিছু জরিপে দেখা গেছে, ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান দুই দলেরই কট্টর সমর্থক সমান যা ২৫-৩০ শতাংশ।
আরও পড়ুন : মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা কেন ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানের মধ্যে সীমাবদ্ধ, অন্য প্রার্থী কেন পাত্তা পান না
এদিকে, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন ভোটাররা সাধারণত প্রার্থীর যোগ্যতা অথবা দলীয় গৌরব দুই বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেন। তবে ভোটারদের মনোভাব এবং তাদের ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো।
প্রার্থীর যোগ্যতা: অনেক ভোটারই প্রার্থীর নেতৃত্বের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতার ওপর বেশি নজর দেন।
অনেক ক্ষেত্রে ভোটাররা তাদের জীবন-জীবিকা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা এবং বিষয়ের প্রতি প্রার্থীর মনোযোগ বিবেচনায় রাখেন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়ে প্রার্থীর পরিকল্পনা ও প্রতিশ্রুতি ভোটারের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে, দলের গৌরবকে বিবেচনায় নিয়ে অনেক ভোটার তাদের সমর্থন জানিয়ে থাকেন। তারা দলীয় গৌরব ও ঐতিহ্যের প্রতি আস্থাশীল থাকতে পছন্দ করেন।
দলকানা সমর্থক: কিছু ভোটার রয়েছেন যা দলের মনোনীত যেকোন প্রার্থীর প্রতি অগাধ আস্থা দেখিয়ে থাকেন। পছন্দের দলের টিকিটে যে প্রার্থীই দাঁড়াক, তারা দলীয় সমর্থনের কারণে তাকে ভোট দিয়ে থাকেন। এই বিশেষ কারণে কট্টর সমর্থকরা প্রার্থীর যোগ্যতার চেয়ে দলের পরিচিতি ও ঐতিহ্যকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।
মুক্তমনা ও স্বাধীনচেতা ভোটার: অল্প সংখ্যক ভোটার রয়েছেন যারা বিশেষ কোনো দলের প্রতি অন্ধ সমর্থন বা পূর্ণ আস্থা দেখান না। তাদের ভোটের সিদ্ধান্ত প্রার্থীর যোগ্যতার ওপর বেশি নির্ভর করে।
পক্ষপাতদুষ্ট ভোটার: যেসব ভোটার একটি নির্দিষ্ট দলের কাছে অঙ্গীকারবদ্ধ, তারা সাধারণত দলের গৌরবকে বেশি গুরুত্ব দেন এবং ব্যক্তিপর্যায়ে প্রার্থীর যোগ্যতা তাদের জন্য ততটা গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে।
সবশেষ বলা চলে, মার্কিন ভোটারদের মধ্যে একটি মিশ্র মনোভাব রয়েছে যাদের সুয়িং বা দোদুল্যমান ভোটার বলা হয়ে থাকে। নির্বাচনের গতিপ্রকৃতি, প্রার্থী এবং দলের ইশতিহার সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে তারা যেকোন মুহূর্তে মত বদল করেন এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে যেকোন প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে থাকেন।
নির্বাচনে অন্য প্রার্থীরা কেন পাত্তা পান না: দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সাধারণত ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে। এই দুই রাজনৈতিক দল কয়েক’শ বছর ধরে দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। দুই দলেরই শক্তিশালী সাংগঠনিক সক্ষমতা, অর্থ-সম্পদ ও সমর্থন-ব্যবস্থা রয়েছে যা তৃতীয় কোন ছোট দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে অর্জন করা প্রায় অসম্ভব।
দুই দলের ভোটের শতাংশ : ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টি বিগত কয়েকটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পেয়েছে তার একটি সারসংক্ষেপ দেয়া হলো। ২০২০ সালের নির্বাচনের জো বাইডেন (ডেমোক্রেট) পেয়েছেন ৫১.৩ শতাংশ আর ডোনাল্ড ট্রাম্প (রিপাবলিকান) ৪৬.৮ শতাংশ পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের (ডেমোক্রেট) চেয়ে ২ শতাংশ কম ভোট পেয়েও ইলেকটোরাল ভোটে জিতে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প (৪৬.২ শতাংশ)। হিলারি ক্লিনটন পেয়েছিলেন ৪৮.২ শতাংশ ভোট। ২০১২ সালের নির্বাচনে বারাক ওবামা (ডেমোক্রেট) ৫১.১ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। অন্যদিকে মিট রমনি (রিপাবলিকান) ৪৭.২ শতাংশ ভোট পান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বারাক ওবামা (৬৮.৩ শতাংশ) বিপুল ভোটের ব্যবধানে
জন ম্যাককেইনকে (রিপাবলিকান) পরাজিত করে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে তার জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা নামে। এতে ধারণা করা যায়, প্রার্থীর কর্মকাণ্ড কিভাবে ভোটারকে প্রভাবিত করে।
এবারের ৬০তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হচ্ছেন ডেমোক্রেট কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। হাড্ডহাড্ডি লড়াইটা এই দু’জন বা দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন গণতান্ত্রিক এই দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট শহর নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিক্সভিল নচ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ‘ভাগ্য নির্ধারণী’ হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রটিতে মাত্র ছয়জন নিবন্ধিত ভোটার। ১০ মিনিটের মধ্যেই তাদের ভোটগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। প্রত্যেকে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে যান। এবং সঙ্গে সঙ্গে ফলাফলও প্রকাশ করা হয়। ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হবার লড়াইয়ে মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প সমান তিনটি করে ভোট পেয়েছেন।
এই নির্বাচনে প্রভাবশালী এই দুই প্রার্থী ছাড়াও অন্য চার প্রার্থী রয়েছেন। তবে তাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তো দূরের কথা তাদের দল বা ব্যক্তিগত অর্জন নিয়ে কয়েক মিনিট কথা বলতে পাবরে এমন মার্কিন নাগরিক কয়জন আছেন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
এই চারজনের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ৭৪ বছর বয়সী জিল স্টেইন। এর আগে ২০১২ ও ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়েছিলেন তিনি। তবে নির্বাচন আশানুরূপ ফল না পেলেও তিনি ওই দুই নির্বাচনে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ও শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করে ভোট পেয়েছিলেন।
গ্রিন পার্টি থেকে জিল স্টেইন ছাড়াও স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন কর্নেল ওয়েস্ট। বর্ণবাদবিরোধী ৭১ বছর বয়সী এ শিক্ষাবিদ বাইডেনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ ও ট্রাম্পকে ‘নব্য ফ্যাসিস্ট’ বলে মনে করেন। লিবার্টারিয়ান পার্টি ২০২০ সালের নির্বাচনে ১ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়েছিল।
এবারের নির্বাচনে তৃতীয় শক্তি হিসেবে আলোচিত প্রার্থী রবার্ট কেনেডি জুনিয়র। তার পক্ষে এবারের নির্বাচনে ৫–৭ শতাংশ সমর্থন ছিল। কিন্তু আগস্টে তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
যেসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং ভোটারের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে বরাবরের মতোই কমলা হ্যারিস এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প রয়ে গেছেন তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
দুই-দলীয় ব্যবস্থা: দেশটির সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ইতিহাসে দুই-দলীয় ব্যবস্থা চালু রয়েছে যা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধুমাত্র প্রভাবশালী এই দুই দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে বাধ্য করে। এই ব্যবস্থায় ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টিই সাধারণত একে অপরের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে নতুন বা ছোট দলগুলোর পক্ষে প্রচারণা ও সমর্থন গড়ে তোলা অনেক কঠিন।
বিপুল সম্পদ: নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং সারা দেশের ৫১টি অঙ্গরাজ্যে প্রচারণা চালানোর জন্য বিপুল পরিমাণের অর্থের প্রয়োজন হয়। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টিই তাদের সমর্থকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ তহবিল সংগ্রহ করতে পারে। ছোট দল বা স্বাধীন/স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে এ ধরনের তহবিল সংগ্রহ করা কঠিন।
প্রথম স্থান নির্ধারণী নির্বাচন ব্যবস্থা (উইনার টেকস অল): বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যেই প্রথম স্থান নির্ধারণী নির্বাচন ব্যবস্থা (উইনার টেকস অল) পদ্ধতি মেনে চলা হয়, যেখানে প্রথম স্থানে থাকা প্রার্থী অঙ্গরাজ্যের সব ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে যান। এতে করে দ্বিতীয় বা পরবর্তী অবস্থানে থাকা প্রার্থীরা শূন্য হাতে ফেরেন। এই ব্যবস্থায় অপেক্ষাকৃত দূর্বল বা ছোট দলগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে যায় তৃতীয় শক্তি বা বিকল্প ধারার দল হিসেবে ভোটারের সমর্থন চাওয়া বা আদায় করে নেয়া। সেই সঙ্গে নিজেকে প্রতিযোগিতামূলক ভাবে উপস্থিত করা সম্ভবপর হয় না।
গণমাধ্যমের মনোযোগ: মূলধারার সংবাদমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রধানত ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান প্রার্থীরাই কভারেজ পেয়ে থাকেন। এটি অনেকাংশ ওই দুই প্রার্থীর প্রতি জনগণের মনোযোগ সৃষ্টিকে প্রভাবিত করে। সেই সঙ্গে অন্যান্য প্রার্থীদের আলোচনায় আসতে পরোক্ষভাবে দেয়াল তৈরি করে দেয়।
ভোটারের মানসিকতা: অধিকাংশ ভোটারই মনে করেন, তৃতীয় শক্তি বা বিকল্প ধারার প্রার্থীদের পক্ষে জেতা প্রায় অসম্ভব। ফলে ওইসব প্রার্থীদের ভোট দিলে তাদের ভোট ‘নষ্ট’ হতে বাধ্য। তাই সিংহভাগ ভোটারই তাদের সমর্থন প্রার্থীর পরিবর্তে মূল দুই দলের প্রার্থীদের মধ্যে যেকোন একজনকে দেয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।
ক্রস ভোটিংয়ের সুযোগ না থাকা: দেশটির নির্বাচনী ব্যবস্থায় একজন ভোটার শুধুমাত্র একজন প্রার্থীকেই ভোট দিতে পারেন। একাধিক প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সুযোগ নেই সেখানে। যেমনটি শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশে রয়েছে। যেখানে একজন ভোটার অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।
এইসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান প্রার্থীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এবং অন্য প্রার্থীরা তুলনামূলকভাবে অনেক কম আলোচনায় আসেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির বাইরে তৃতীয় দলের কয়েক প্রার্থীর নির্বাচনে জয়ী হওয়ার রেকর্ড রয়েছে, যদিও তা খুব সীমিত এবং তা ঘটেছিল কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে।
ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির যাত্রা শুরু হয় ভিন্ন সময় এবং প্রেক্ষাপটে। ডেমোক্রেট পার্টির যাত্রা শুরু ১৮২৮ সালে, যা প্রথমে ‘ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান পার্টি’ হিসেবে পরিচিত ছিল। এটি থমাস জেফারসনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
দলটি মূলত ফেডারালিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার এবং কৃষকশ্রেণির স্বার্থ রক্ষার জন্য সুসংগঠিত হয়েছিল। পরে এটি বিভিন্ন চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে যায় এবং আধুনিক ডেমোক্রেট পার্টি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
অন্যদিকে রিপাবলিকান পার্টির যাত্রা শুরু হয় ১৮৫৪ সালে। এটি মূলত উইগ পার্টির একাংশ ও জাতীয়তাপন্থী কয়েকটি দলের সমন্বয়ে গঠিত হয়।এই দলেন উদ্দেশ্য ছিল দাসত্ব রুখে দেয়া এবং কৃষি ও শিল্পের সমর্থন করা। আব্রাহাম লিঙ্কন ১৮৬০ সালে প্রথম রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। এই দুটি দলই মার্কিন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় শতবর্ষ ধরে প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত এবং বর্তমানে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত।
জয়ী প্রেসিডেন্টের সংখ্যা কার বেশি: ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান পার্টির টিকেটে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়া প্রার্থীর সংখ্যা তুলনা করলে রিপাবলিকানরা এগিয়ে রয়েছেন। ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ এখন পর্যন্ত ১৬ জন ডেমোক্রেট প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। আর
রিপাবলিকান পার্টি থেকে জয়ী হয়েছেন ২৪ জন। অন্য ছয়জন এই দুই দলের সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন