বাজারের ১০-২০ টাকা বাঁচিয়ে কোটি টাকা জমানোর নিনজা টেকনিক
       
খুঁজুন                
                               
রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫, ৮ আষাঢ়, ১৪৩২
           

বাজারের ১০-২০ টাকা বাঁচিয়ে কোটি টাকা জমানোর নিনজা টেকনিক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১১:২৬ অপরাহ্ণ
বাজারের ১০-২০ টাকা বাঁচিয়ে কোটি টাকা জমানোর নিনজা টেকনিক

বিরাট সিঁড়ি দিয়ে গট গট করে নায়িকার বাবা জনৈক ‘চৌধুরী সাহেব’ নেমে আসছেন। তাঁর গায়ে একটা চক্কর-বক্কর মার্কা আঁকিবুঁকি করা সিল্কের ড্রেসিং গাউন। কোমরের কাছে গাউনের দুটো ফিতে বিষ-গেরো দিয়ে বাঁধা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। ঠোঁটের কোনায় কামড়ে ধরে থাকা কালো পাইপ।

শওকত আকবর টাইপের চৌধুরী সাহেব সিঁড়ি দিয়ে নেমে নিচতলায় দাঁড়িয়ে থাকা নায়ককে ভারী গলায় বললেন, ‘আমার মেয়ের জীবন থেকে সরে দাঁড়াতে বলো কত চাও? পঞ্চাশ হাজার? ষাট হাজার? সত্তর? আশি?’

চৌধুরী সাহেব টেনেটুনে বড়জোর এক লাখে গিয়ে ঠেকলেন। তার বেশি তাঁকে উঠতে হলো না।

তার আগেই মারাত্মক আত্মমর্যাদাবিশিষ্ট নায়ক বিকট চিৎকার করে ‘চৌধুরী সাহেব! টাকা দিয়ে সব কেনা যায়, ভালোবাসা কেনা যায় না’ টাইপের কিছু একটা বলেটলে পরিবেশ গরম করে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমজাদ হোসেন এবং তাঁর ছেলে আসিফ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমজাদ হোসেন এবং তাঁর ছেলে আসিফ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছেছবি: সংগৃহীত

বিরাট সিঁড়ি দিয়ে গট গট করে নায়িকার বাবা জনৈক ‘চৌধুরী সাহেব’ নেমে আসছেন। তাঁর গায়ে একটা চক্কর-বক্কর মার্কা আঁকিবুঁকি করা সিল্কের ড্রেসিং গাউন। কোমরের কাছে গাউনের দুটো ফিতে বিষ-গেরো দিয়ে বাঁধা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। ঠোঁটের কোনায় কামড়ে ধরে থাকা কালো পাইপ।

শওকত আকবর টাইপের চৌধুরী সাহেব সিঁড়ি দিয়ে নেমে নিচতলায় দাঁড়িয়ে থাকা নায়ককে ভারী গলায় বললেন, ‘আমার মেয়ের জীবন থেকে সরে দাঁড়াতে বলো কত চাও? পঞ্চাশ হাজার? ষাট হাজার? সত্তর? আশি?’

চৌধুরী সাহেব টেনেটুনে বড়জোর এক লাখে গিয়ে ঠেকলেন। তার বেশি তাঁকে উঠতে হলো না।

তার আগেই মারাত্মক আত্মমর্যাদাবিশিষ্ট নায়ক বিকট চিৎকার করে ‘চৌধুরী সাহেব! টাকা দিয়ে সব কেনা যায়, ভালোবাসা কেনা যায় না’ টাইপের কিছু একটা বলেটলে পরিবেশ গরম করে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

আরও পড়ুন

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি কি সরকার নিজেই ঠেকাতে চায়

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি কি সরকার নিজেই ঠেকাতে চায়

সত্তর-আশির দশকের বাংলা সিনেমার এই কমন দৃশ্য এখন আর চলে না।

আজকের এই ডিভ্যালুয়েশনের বাজারে কোনো চৌধুরী সাহেব যদি নায়ককে বলেন, ‘কত চাও? পঞ্চাশ? ষাট? সত্তর? আশি?’ —তাহলে দর্শক ধরেই নেবে এই ‘পঞ্চাশ’ মানে ‘পঞ্চাশ হাজার’ না; ওটা হবে ‘পঞ্চাশ কোটি’, নিদেনপক্ষে ‘পঞ্চাশ লাখ’।

কারণ এই বাজারে কারও কারও বাড়ির কাজের লোকও চার শ কোটি টাকার মালিক। এই দেশে এমন লোকও আছে যার ইউরোপে দুই শর বেশি বাড়ি আছে।

কোনো কোনো পিয়নের কয়েক শ কোটি টাকার গাড়ি-বাড়ি আছে। সরকারি অফিসের এমন ড্রাইভারও আছে, যার বাড়ির একটা দরজা বানাতেই খরচ হয়েছে দশ লাখ টাকা।

গত দুই দশকে বিরাট ‘উন্নয়ন’ হয়েছে। লোকের ‘পারচেজ পাওয়ার’ কোথায় উঠেছে আর ‘ডিভ্যালুয়েশন’ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, তা হাতে এবং কলমে বুঝতে হলে রোববার (৪ নভেম্বর) রাতে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ৩৩ নম্বর বাড়িতে ঘটে যাওয়া দৃশ্যপটে চোখ রাখতে হবে। মূল গেটের পাশে নামফলকে রোমান হরফে বাড়িটির নাম লেখা— ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

সে বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন। যৌথবাহিনীর সদস্যরা সে বাসায় চার ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালান।

বাজারের ১০-২০ টাকা বাঁচিয়ে কোটি টাকা জমানোর নিনজা টেকনিক

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমজাদ হোসেন এবং তাঁর ছেলে আসিফ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমজাদ হোসেন এবং তাঁর ছেলে আসিফ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছেছবি: সংগৃহীত

বিরাট সিঁড়ি দিয়ে গট গট করে নায়িকার বাবা জনৈক ‘চৌধুরী সাহেব’ নেমে আসছেন। তাঁর গায়ে একটা চক্কর-বক্কর মার্কা আঁকিবুঁকি করা সিল্কের ড্রেসিং গাউন। কোমরের কাছে গাউনের দুটো ফিতে বিষ-গেরো দিয়ে বাঁধা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। ঠোঁটের কোনায় কামড়ে ধরে থাকা কালো পাইপ।

শওকত আকবর টাইপের চৌধুরী সাহেব সিঁড়ি দিয়ে নেমে নিচতলায় দাঁড়িয়ে থাকা নায়ককে ভারী গলায় বললেন, ‘আমার মেয়ের জীবন থেকে সরে দাঁড়াতে বলো কত চাও? পঞ্চাশ হাজার? ষাট হাজার? সত্তর? আশি?’

চৌধুরী সাহেব টেনেটুনে বড়জোর এক লাখে গিয়ে ঠেকলেন। তার বেশি তাঁকে উঠতে হলো না।

তার আগেই মারাত্মক আত্মমর্যাদাবিশিষ্ট নায়ক বিকট চিৎকার করে ‘চৌধুরী সাহেব! টাকা দিয়ে সব কেনা যায়, ভালোবাসা কেনা যায় না’ টাইপের কিছু একটা বলেটলে পরিবেশ গরম করে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

আরও পড়ুন

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি কি সরকার নিজেই ঠেকাতে চায়

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি কি সরকার নিজেই ঠেকাতে চায়

সত্তর-আশির দশকের বাংলা সিনেমার এই কমন দৃশ্য এখন আর চলে না।

আজকের এই ডিভ্যালুয়েশনের বাজারে কোনো চৌধুরী সাহেব যদি নায়ককে বলেন, ‘কত চাও? পঞ্চাশ? ষাট? সত্তর? আশি?’ —তাহলে দর্শক ধরেই নেবে এই ‘পঞ্চাশ’ মানে ‘পঞ্চাশ হাজার’ না; ওটা হবে ‘পঞ্চাশ কোটি’, নিদেনপক্ষে ‘পঞ্চাশ লাখ’।

কারণ এই বাজারে কারও কারও বাড়ির কাজের লোকও চার শ কোটি টাকার মালিক। এই দেশে এমন লোকও আছে যার ইউরোপে দুই শর বেশি বাড়ি আছে।

কোনো কোনো পিয়নের কয়েক শ কোটি টাকার গাড়ি-বাড়ি আছে। সরকারি অফিসের এমন ড্রাইভারও আছে, যার বাড়ির একটা দরজা বানাতেই খরচ হয়েছে দশ লাখ টাকা।

গত দুই দশকে বিরাট ‘উন্নয়ন’ হয়েছে। লোকের ‘পারচেজ পাওয়ার’ কোথায় উঠেছে আর ‘ডিভ্যালুয়েশন’ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, তা হাতে এবং কলমে বুঝতে হলে রোববার (৪ নভেম্বর) রাতে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ৩৩ নম্বর বাড়িতে ঘটে যাওয়া দৃশ্যপটে চোখ রাখতে হবে। মূল গেটের পাশে নামফলকে রোমান হরফে বাড়িটির নাম লেখা— ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

সে বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন। যৌথবাহিনীর সদস্যরা সে বাসায় চার ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালান।

আরও পড়ুন

রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে দুর্নীতিবাজেরা এখন অনেক বেশি ক্ষমতাবান

রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে দুর্নীতিবাজেরা এখন অনেক বেশি ক্ষমতাবান 

তল্লাশি করে পাওয়া যায় নগদ এক কোটি সাড়ে ৯ লাখ টাকা, মার্কিন ডলার ও ইউরোসহ কয়েক ধরনের বিদেশি মুদ্রা, ১১টি আইফোন এবং দামি ব্র্যান্ডের সাতটি ঘড়ি।

ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, জব্দ করা টাকার বান্ডিলগুলো যখন সাজিয়ে রাখা হচ্ছিল, তখন আমজাদ সাহেব বলছিলেন, ‘…আমার সারা জীবনে দশ টাকার দুর্নীতি নাই। এগুলো আমার ওয়াইফের সঞ্চয়, আমার মেয়ের সঞ্চয়।’

আমজাদ সাহেবের স্ত্রী ক্রন্দনসিক্ত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘বাজার কইর‍্যা, বাজারের টাকা থিকা দশ টাকা বিশ টাকা জমায়া আমি এই টাকা বানাইছি বাবা।’

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের কর্তারা আমজাদ সাহেব ও তাঁর স্ত্রীর এই বক্তব্যকে অমূল্য সম্পদ জ্ঞানে কাজে লাগাতে পারতেন।

সঞ্চয়ী জাতি গড়ে তুলতে তাঁরা এই দুজনের সঞ্চয়ের গল্প তাদের প্রচার-প্রচারণার লিফলেট বা ক্যালেন্ডারে উদ্দীপক ভাষ্য হিসেবে ছাপতে পারতেন।

‘বাজারের টাকা থিকা দশ টাকা বিশ টাকা জমায়া কোটিপতি হওয়া নিনজা টেকনিক’ শিরোনামে মোটিভেশনাল বইও লেখা যেত।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমজাদ হোসেন এবং তাঁর ছেলে আসিফ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আমজাদ হোসেন এবং তাঁর ছেলে আসিফ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছেছবি: সংগৃহীত

বিরাট সিঁড়ি দিয়ে গট গট করে নায়িকার বাবা জনৈক ‘চৌধুরী সাহেব’ নেমে আসছেন। তাঁর গায়ে একটা চক্কর-বক্কর মার্কা আঁকিবুঁকি করা সিল্কের ড্রেসিং গাউন। কোমরের কাছে গাউনের দুটো ফিতে বিষ-গেরো দিয়ে বাঁধা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা। ঠোঁটের কোনায় কামড়ে ধরে থাকা কালো পাইপ।

শওকত আকবর টাইপের চৌধুরী সাহেব সিঁড়ি দিয়ে নেমে নিচতলায় দাঁড়িয়ে থাকা নায়ককে ভারী গলায় বললেন, ‘আমার মেয়ের জীবন থেকে সরে দাঁড়াতে বলো কত চাও? পঞ্চাশ হাজার? ষাট হাজার? সত্তর? আশি?’

চৌধুরী সাহেব টেনেটুনে বড়জোর এক লাখে গিয়ে ঠেকলেন। তার বেশি তাঁকে উঠতে হলো না।

তার আগেই মারাত্মক আত্মমর্যাদাবিশিষ্ট নায়ক বিকট চিৎকার করে ‘চৌধুরী সাহেব! টাকা দিয়ে সব কেনা যায়, ভালোবাসা কেনা যায় না’ টাইপের কিছু একটা বলেটলে পরিবেশ গরম করে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

আরও পড়ুন

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি কি সরকার নিজেই ঠেকাতে চায়

সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি কি সরকার নিজেই ঠেকাতে চায়

সত্তর-আশির দশকের বাংলা সিনেমার এই কমন দৃশ্য এখন আর চলে না।

আজকের এই ডিভ্যালুয়েশনের বাজারে কোনো চৌধুরী সাহেব যদি নায়ককে বলেন, ‘কত চাও? পঞ্চাশ? ষাট? সত্তর? আশি?’ —তাহলে দর্শক ধরেই নেবে এই ‘পঞ্চাশ’ মানে ‘পঞ্চাশ হাজার’ না; ওটা হবে ‘পঞ্চাশ কোটি’, নিদেনপক্ষে ‘পঞ্চাশ লাখ’।

কারণ এই বাজারে কারও কারও বাড়ির কাজের লোকও চার শ কোটি টাকার মালিক। এই দেশে এমন লোকও আছে যার ইউরোপে দুই শর বেশি বাড়ি আছে।

কোনো কোনো পিয়নের কয়েক শ কোটি টাকার গাড়ি-বাড়ি আছে। সরকারি অফিসের এমন ড্রাইভারও আছে, যার বাড়ির একটা দরজা বানাতেই খরচ হয়েছে দশ লাখ টাকা।

গত দুই দশকে বিরাট ‘উন্নয়ন’ হয়েছে। লোকের ‘পারচেজ পাওয়ার’ কোথায় উঠেছে আর ‘ডিভ্যালুয়েশন’ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে, তা হাতে এবং কলমে বুঝতে হলে রোববার (৪ নভেম্বর) রাতে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ৩৩ নম্বর বাড়িতে ঘটে যাওয়া দৃশ্যপটে চোখ রাখতে হবে। মূল গেটের পাশে নামফলকে রোমান হরফে বাড়িটির নাম লেখা— ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

সে বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন। যৌথবাহিনীর সদস্যরা সে বাসায় চার ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালান।

আরও পড়ুন

রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে দুর্নীতিবাজেরা এখন অনেক বেশি ক্ষমতাবান

রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে দুর্নীতিবাজেরা এখন অনেক বেশি ক্ষমতাবান 

তল্লাশি করে পাওয়া যায় নগদ এক কোটি সাড়ে ৯ লাখ টাকা, মার্কিন ডলার ও ইউরোসহ কয়েক ধরনের বিদেশি মুদ্রা, ১১টি আইফোন এবং দামি ব্র্যান্ডের সাতটি ঘড়ি।

ঘটনার ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, জব্দ করা টাকার বান্ডিলগুলো যখন সাজিয়ে রাখা হচ্ছিল, তখন আমজাদ সাহেব বলছিলেন, ‘…আমার সারা জীবনে দশ টাকার দুর্নীতি নাই। এগুলো আমার ওয়াইফের সঞ্চয়, আমার মেয়ের সঞ্চয়।’

আমজাদ সাহেবের স্ত্রী ক্রন্দনসিক্ত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘বাজার কইর‍্যা, বাজারের টাকা থিকা দশ টাকা বিশ টাকা জমায়া আমি এই টাকা বানাইছি বাবা।’

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের কর্তারা আমজাদ সাহেব ও তাঁর স্ত্রীর এই বক্তব্যকে অমূল্য সম্পদ জ্ঞানে কাজে লাগাতে পারতেন।

সঞ্চয়ী জাতি গড়ে তুলতে তাঁরা এই দুজনের সঞ্চয়ের গল্প তাদের প্রচার-প্রচারণার লিফলেট বা ক্যালেন্ডারে উদ্দীপক ভাষ্য হিসেবে ছাপতে পারতেন।

‘বাজারের টাকা থিকা দশ টাকা বিশ টাকা জমায়া কোটিপতি হওয়া নিনজা টেকনিক’ শিরোনামে মোটিভেশনাল বইও লেখা যেত।

আরও পড়ুন

আমাদের দেশে হবে সেই ‘ছাগল’ কবে!

আমাদের দেশে হবে সেই ‘ছাগল’ কবে!

কিন্তু গণিতের হিসাবের জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না।

কারণ জিনিসটা পাটিগণিতে ফেলে যদি গুন-ভাগ করা হয়, তাহলে দেখা যাবে, গড়ে প্রতিদিন ৩০ টাকা করে জমালে এই পরিমাণ টাকা জমাতে হাজার বছর লাগার কথা। আমজাদ সাহেবের স্ত্রী এক হাজার বছর ধরে বাজারের টাকা থেকে দশ-বিশ টাকা সরিয়েছেন, আর সেই খুচরা-খাচরা টাকা এক হাজার টাকার নোটের বান্ডিলে কনভার্টেড হয়ে গেছে—সেটা কোনো কাজের কথা না।

তবে বিশেষ ঘটনা হলো, কোনো রকম ব্যবসাপাতি না করে কিংবা কোনো দুর্নীতিতে না জড়িয়েও যে সরকারি চাকরিজীবীরা ঘরের আলমারিতে কোটি টাকা জমিয়ে ফেলতে পারেন, তার বড় উদাহরণ আমজাদ সাহেব সৃষ্টি করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমার সারা জীবনে দশ টাকার দুর্নীতি নাই। এগুলো আমার ওয়াইফের সঞ্চয়, আমার মেয়ের সঞ্চয়।’

সমস্যা হলো, শুধু সরকারি চাকরির বেতন ভাতার টাকায় সংসার চালানোর পর ভদ্রলোকের স্ত্রী ও ছেলে–মেয়ে এত টাকা জমিয়ে ফেললেন এবং লক্ষাধিক টাকা দামের আইফোন আর দামি মডেলের ঘড়িতে ঘর ভরে ফেললেন—এই জিনিস লোকে বিশ্বাস করতে চাচ্ছে না।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও বিশ্বাস হয়নি। সে কারণে তাঁরা আমজাদ সাহেব এবং তাঁর ছেলে আসিফ হাসানকে গ্রেপ্তার করেছেন।

এক সময় কেউ লাখ টাকার মালিক হলে সে তার বাড়িতে একটা বিশেষ বাতি জ্বালাত। সেই বাতির নাম ‘লাখের বাতি’।

সেই বাতি দেখে লোকে বুঝত তিনি লাখপতি হয়েছেন।

সেই আমলে বলা হতো, ‘হাতি মরলেও লাখ টাকা’। তখন লাখের দাম ছিল। লাখপতির দাম ছিল। এখন লাখ তো দূরের কথা কোটিরই ‘বেইল নাই’।

বিশেষ বিশেষ খাতের বহু সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে কোটি টাকা সঞ্চয় করা কোনো ঘটনা না।

চাকরি পাওয়ার আগে যে লোককে অতি দীনহীন অবস্থায় ঘুরতে দেখেছি, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার চার বছরের মাথায় তাঁকে নামে বেনামে বাড়ি-গাড়ি কিনতে দেখেছি।

অদ্ভুত বিষয় হলো, ওই কর্মকর্তাটির পরিবারের ধারণা, আমজাদ সাহেবের মতো তিনিও ‘সারা জীবনে দশ টাকার দুর্নীতি’ করেননি।

তার মানে, তাঁদের বিশ্বাস, সরকার তাঁকে বেতন ভাতা হিসেবে কোটি কোটি টাকা দিয়ে যাচ্ছে।

‘দশ টাকার দুর্নীতি’ না করেও কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তোলা আমজাদ সাহেবদের সংখ্যা কত তা আমাদের জানা নেই। কিন্তু জানা দরকার। সেটি সম্ভবত সরকার আমাদের জানাতে যাচ্ছে।

গত ২৬ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, সব সরকারি কর্মচারীকে সম্পদের বিবরণী দাখিল করতে হবে।

সেপ্টেম্বর মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেছিলেন, বছরে একবার এই বিবরণী জমা দিতে হবে।

তিনি বলেছিলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে এটি একটি বার্তা। আয়করের বিবরণী সবাই জমা দেন না। যাঁদের করযোগ্য আয় আছে, তাঁরাই কেবল দেন। আর এখন যাঁদের কোনো সম্পদ নেই, তাঁদেরও তথ্য বা বিবরণী জমা দিতে হবে। এটি জনস্বার্থে দিতে হবে।…সোজা কথা, জমা না দিলে আইনানুগ খবর আছে। যত বড় যে-ই হোক, চোরকে চোর বলতে হবে।’

রক্তকরবী নাটকের রাজা তাল তাল সোনা জমাত। আমাদের সরকারি খাতের আমজাদ সাহেবরা বান্ডিল বান্ডিল টাকা জমাচ্ছেন। টাকাগুলো তাঁরা কোথায় জমাচ্ছেন, কত জমেছে, তা জানা দরকার। এ বছরই জানা দরকার।

সিলেটে টানা পাঁচদিন বৃষ্টির আভাস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৫:৪৪ অপরাহ্ণ
সিলেটে টানা পাঁচদিন বৃষ্টির আভাস

আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত টানা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই সময়ের মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলেে জানিয়েছে সংস্থাটি। শনিবার (২১ জুন) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হকের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

 

 

আবহাওয়া অফিস জানায়, রবিবার (২২ জুন) সকাল ৯টার মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

 

 

 

রবিবার (২২ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।

 

 

সোমবার (২৩ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

 

 

মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

 

 

বুধবার (২৫ জুন) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের নিয়ে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ
বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের নিয়ে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি

সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। নবগঠিত কমিটিতে আছেন বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির তিন নেতারা।

 

বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সদ্য অনুমোদিত কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান আলী ও নুরুল হুদা জুনেদ। তারা জানান, পদাধিকারবলে নবগঠিত এ কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত হয়েছেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী।

 

 

 

আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে ১১ সদস্যের। এতে পদাধিকারবলে সদস্যসচিব রাখা হয়েছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সিলেটের উপপরিচালককে। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন নয়জন। এর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সদস্য হিসেবে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, সিলেট মহানগর জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান আলী ও এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল হুদা জুনেদ।

 

 

 

কমিটিতে এনামুল ও শাহজাহান ‘ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, ক্রীড়া অনুরাগী ও সংগঠক’ হিসেবে স্থান পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে নুরুল ‘ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, সাবেক ফুটবলার ও সংগঠক’ হিসেবে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়।

 

 

 

 

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সাবেক ক্রিকেটার এনামুল হক জুনিয়র, সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ রাহাত শামস, ক্রীড়া অনুরাগী ও সংগঠক মো. মোকাম্মেল হক এবং সাবেক ফুটবলার আবিবুল বারি আয়হান। এ ছাড়া ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে নাইম শেহজাদ ও ক্রীড়া সাংবাদিক প্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয় দৈনিক সিলেটের ডাকের প্রধান বার্তা সম্পাদক এনামুল হক জুবের অন্তর্ভুক্ত হন।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) সচিব মো. আমিনুল ইসলামের সই করা অনুমোদনপত্রে বলা হয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮-এর ধারা ২(১৫)-এ উল্লেখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে কমিটি হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮-এর ২ (৪) ও ৮-এ বর্ণিত পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক এ কমিটি অনুমোদিত হয়।

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ সিদ্ধান্তে অনিশ্চিত ট্রাম্প, চাপে ইসরায়েল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫, ১২:২৪ পূর্বাহ্ণ
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ সিদ্ধান্তে অনিশ্চিত ট্রাম্প, চাপে ইসরায়েল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের বিষয়ে যুদ্ধ জড়িয়ে পড়া নিয়ে এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি। তার ‘কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে’—এমন ইঙ্গিতেই গভীর হতাশায় পড়েছে ইসরায়েল ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জোট। এমনটাই জানিয়েছেন ইসরায়েলি বিশ্লেষক গিডিওন লেভি।

লেভি বলেন, ট্রাম্পের কাছে ‘দুই সপ্তাহ’ মানে হচ্ছে অনিশ্চয়তার অন্তহীন সময়। যদি এটি কেবল কৌশলগত কোনো প্রতারণা না হয়ে থাকে, তবে স্পষ্ট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধে জড়ানোর আশঙ্কা ক্রমেই ফিকে হয়ে আসছে।

আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লেভি আরও বলেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতায় আঘাত হানলেও নিরাপত্তার স্থায়ী সমাধান মিলবে না। কারণ, ইরান সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় নিজের সামরিক সক্ষমতা গড়ে তুলবে।

তার মন্তব্য, “ইসরায়েলের সামনে গাজা ও অন্যান্য নিরাপত্তাজনিত জটিলতা রয়েছে, যা সহজে দূর হওয়ার নয়।”