২০২৪ সালে সিলেটে বয়ে গেল যত ঘটনা ২৩ খুন, ৬ ডাকাতি, ৫৪ ছিনতাই ও ১৪৮ চুরি
       
খুঁজুন                
                               
সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

২০২৪ সালে সিলেটে বয়ে গেল যত ঘটনা ২৩ খুন, ৬ ডাকাতি, ৫৪ ছিনতাই ও ১৪৮ চুরি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ
২০২৪ সালে সিলেটে বয়ে গেল যত ঘটনা ২৩ খুন, ৬ ডাকাতি, ৫৪ ছিনতাই ও ১৪৮ চুরি

চুরি ও ছিনতাই: নগরীতে প্রতিদিন বাড়ছে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা। ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশের টহল জোরদার না থাকায় সিলেটে বেড়েছে চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা। দিনের বেলাতেও অস্ত্র ব্যবহার করে টাকা লুটের ঘটনা ঘটেছে। বেড়েছে বাসা-বাড়িতে চুরি। এতে জনমনে উৎকন্ঠা বেড়েই চলেছে। গত ২০২৪ সালে ৫৪টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ও ১৪৮টি চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার মধ্যে রয়েছে।

গত ২রা নভেম্বর বেলা বারোটার দিকে সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকায় ছিনতাইকারীরা ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড এর নগদ ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় শাহপরান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ফুলকলি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড সিলেট বিভাগের ডিজিএম মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন।

নগরীতে দিন দুপুরে দুই সহোদরকে জিম্মি করে জমি কেনার ৪২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

৯ ডিসেম্বর বেলা পৌনে ২টার দিকে শিবগঞ্জ ফরহাদ খাঁর পুল সংলগ্ন ইয়ামাহা মোটরসাইকেল শোরুমের সামনে ছিনতাইয়ের এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক। এর আগে নগরীর টিলাগড় পিউরিয়া ফুড প্রোডাক্টস লি: এর সামন থেকে প্রাইভেট কার ঢাকা মেট্রো গ – ১২-৫২১৪ নাম্বারের গাড়িটি ছিনতাই হয়। ছিনতাই পরপর্তীতে শাহ পরাণ (র:) থানায় অভিযোগ করেন গাড়ির মালিক। উপশহর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ আবুল হোসেন চুরি হওয়া গাড়ি উদ্ধার করতে সক্ষম হোন।

এর আগে নগরীর শিবগঞ্জ ও সাদিপুরে মধ্য স্থান থেকে রসুন বুঝাই একটি ট্রাক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে আটক করে। আটক এক যুবক বলেন, সন্ধ্যার সময় ১৭০ বস্তা চাইনিজ রসুন নিয়ে একটি ডিআই ট্রাক কালীঘাট থেকে জৈন্তাপুর যাচ্ছিলো। শিবগঞ্জ আসার পর হাতিম আলী মাজার থেকে সাদিপুর এর মধ্যে আসতেই কিছু লোক মোটরসাইকেল দিয়ে আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে ও লুটেরারা সিএনজি টমটম রিকসাযোগে গাড়ি থেকে প্রায় দেড়শ বস্তা রসুন ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

গত ২৯ অক্টোবর সিলেট নগরীর রায়নগর এলাকায় বাসার ভেতর থেকে একটি নতুন মোটরসাইকেল চুরি হয়। এ ঘটনায় কতোয়ালী থানায় ওই গাড়ির মালিক হোসেন আহমদ সিদ্দিকী দেরিতে হলেও ৯ নভেম্বর একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন। যার নম্বর ৭১৫। সেই মোটরসাইকেলটিও উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি নেই।

গত ২রা অক্টোবর আনুমানিক রাত সাড়ে বারোটার দিকে শাহজালাল উপশহরের ডি-বøকের ২৫ নম্বর সড়কের ২ নম্বর বাসার বাসিন্দা সমবায় অফিসার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের বাসা থেকে একটি ‘আইফোন-১৩’ চুরি হয়। ভোরবেলা ঘুম থেকে মোবাইল না পেয়ে তিনি পরদিন ৩ অক্টোবর শাহপরান (রহ) থানায় সাধারণ ডায়েরী (নম্বর-১৯২) করেন। ভ‚ক্তভোগীরা বলছেন, প্রায় সময় এ রকম ঘটনা ঘটছে। নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।

নগরীর করেরপাড়ায় দুর্গাপূজার সময় দুটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। প্রথমটি করেরপাড়ায় পয়েন্টের বাসায়। পরিবারটি ঢাকায় থাকায় চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা পুরো ঘর তছনছ করে একটি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরিবারের কেউ পুলিশকে জানায় নি। তবে তাদের এক নিকট আত্মীয় বিষয়টি এই প্রতিবেদককে অবহিত করেন। ওই সময় আরেকটি চুরির ঘটনা ঘটে করেরপাড়ার সতীশ সরণি এলাকায়। পূজার সময় ওই বাসার ভিতর প্রবেশ করে স্বর্ণসহ অনেক টাকার মালামাল নিয়ে যায় চোরেরা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দূরবর্তী এলাকা থেকে বাসযোগে আসা যাত্রী ও চাকরিজীবী মানুষ ছিনতাইকারীদের মূল টার্গেট। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে বন্দরবাজার আসার সময় সিএনজি অটোরিকসার যাত্রীরা প্রায় প্রতিদিন মোবাইল, টাকা চুরির শিকার হচ্ছেন। একটি চক্র চারজন যাত্রী নিয়ে আগেই বসে থাকে। শুধু একজন যাত্রীর অপেক্ষায় বসে থাকে। তারপর সময় বুঝে ওই একজন যাত্রীর কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে মাঝপথে গাড়ির সমস্যা দেখিয়ে নামিয়ে চম্পট দেয়।

আইনজীবীসহ সচেতনমহল বলছেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনায় তাদের মনোবল কিছুটা ভেঙে গেছে। তাদের টহলও আগের মতো জোরদার নয়। এই সুযোগে চুরি-ছিনতাই বেড়েছে। পুলিশ সংগঠিত না হওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনীর তৎপরতা আরো বাড়ানো উচিত।

সদ্য বিদায়ী বছর ২০২৪ এ সিলেট নগরীর ক্রমঅবনতিশীল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম পিপিএম (সেবা) ইংরেজী নতুন ২০২৫-এ সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও আরো উন্নতকরার লক্ষে পুলিশ সর্বাত্ত প্রচেষ্টা অব্যাবহত থাকবে। তিনি বলেন- সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় অপরাধী সনাক্ত করণের লক্ষে যেসব সিসি ক্যামেরা বিকল অবস্থায় রয়েছে সেগুলো সচল করা হবে। যেসব এলাকা সিসি ক্যামেরার আওয়তায় নেই সেইসব এলাকা সিসি ক্যামেরার আওয়তায় নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালানো হবে।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।