শ্রীমঙ্গলে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা: সমাধানে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত
       
খুঁজুন                
                               
সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

শ্রীমঙ্গলে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা: সমাধানে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪, ৪:৪৬ অপরাহ্ণ
শ্রীমঙ্গলে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা: সমাধানে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা: সমাধানে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

 

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) স্থানীয় ব্র্যাক লার্নিং সেন্টারে দিনব্যাপী চা শ্রমিকদের নিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন এবং দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে সোসাইটি ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সেড)ও ব্রাত্যজন রিসোর্স সেন্টার (বিআরসি)।

 

 

 

 

আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘নারী চা শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মজীবী নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য’।

 

চা শ্রমিকদের নিয়ে সেড-এর জরিপ ও অনুসন্ধান-ভিত্তিক সদ্য প্রকাশিত ১৫২ পৃষ্ঠার বই, টি ওয়ার্কার্স অব বাংলাদেশ: রিয়ালিটিজ অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস (বাংলাদেশের চা শ্রমিক: বাস্তবতা ও চ্যালেঞ্জ) গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এ প্রকাশনায় চা শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, কর্মপরিবেশ, চা বাগানে শ্রম আইনের প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ, মজুরি, স্বাস্থ্য, নারীর প্রতি সহিংসতা, সামাজিক সুরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—উপাত্ত ও বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে। বই-এ নারী চা শ্রমিকদের বিষয়ে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।

 

চা বাগান নিয়ে সেড’র এই নতুন প্রকাশনা ও পূর্বের আরও প্রায় ডজনখানেক প্রকাশনার সাথে সবাইকে পরিচিত করে সেড’র পরিচালক ফিলিপ গাইন বলেন, “বিজ্ঞ অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান চা শিল্পের মালিকানায় শ্রমিদের অংশিদারিত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। এরকম স্মল হোল্ডিং-এর মডেল আছে শ্রীলঙ্কায়। এ ধরণের মডেল নিয়ে কী আমরা বাংলাদেশে কথা বলতে পারছি? তাহলে কীভাবে বৈষম্যের অবসান হবে!”

 

 

 

আলোচনা পর্বে নারীকন্ঠ হিসাবে যৌনকর্মীদের নিয়ে কর্মরত অধিকার কর্মী রাজিয়া সুলতানা যৌনকর্মীদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বলেন, “পূর্বেও রাষ্ট্রের কাছে যৌনকর্মীরা তেমন সাহায্য পায়নি। ছাত্র আন্দোলনের পরে এই কর্মীদের অবস্থা এখন আরও খারাপ। ভাসমান যেসব যৌনকর্মী আছে তারা এখন রাস্তায় কোথাও দাঁড়াতে পারে না, ছাত্র পরিচয়ের কেউ না কেউ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। উপার্জন তো ওদের কিছু লাগবে। এই পরিচয়ের কথা শুনলে অন্য কোনও চাকুরিতেও নিতে চায় না কেউ। কোথায় যাবে এরা?”

 

 

 

“আমাদের মতো চা শ্রমিক, বিশেষ করে মাঠে কাজ করা এতো নারী চা শ্রমিকের কথা চিন্তা করে কী শ্রম আইনের সংশোধন হয়?” এমন প্রশ্ন করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন (বিসিএসইউ)-এর জুড়ি ভ্যালীর সহ-সভাপতি শ্রীমতি বাউরি। “পাতাতোলার সেকশনে না আছে শৌচাগার, না আছে বিশুদ্ধ খাবার পানি। এতোসব লঙ্ঘনের অবসান কবে হবে? আশা করি এই অন্তর্র্বতী সরকার এইদিকে নজর দিবে।”

 

 

এছাড়া নারীকন্ঠ হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিসিএসইউ-এর সহ-সভাপতি জেসমিন আক্তার, হিজড়া অধিকার কর্মী ইভান আহমেদ কথা, এবং শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারের হরিজন নারী প্রতিনিধি সুকন বাশফোড় ও বাসন্তি বাশফোড়।

 

 

 

আলোচনা পর্বে সম্মানিত অতিথি বিসিএসইউ-এর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল চা বাগানের নারী চা শ্রমিকের অশোভন কর্মপরিবেশের বাইরে ঘরের সহিংসতার বিষয়ে বলেন, “চা বাগানে সরকারের অনুমোদিত মদের দোকান বাগানের নারীদের সহিংসতার শিকারের অন্যতম কারণ। দিনশেষে কাজ থেকে ফিরে মদ্যপ স্বামীর হাতে অনেক নারী চা শ্রমিকই সহিংসতার শিকার হন। এই মদের দোকানের লাইসেন্স অতিসত্বর বন্ধ করা উচিত।”

 

 

 

মালিকপক্ষের নিজেদের দায় এড়ানোর প্রবণতার উপর আলোকপাত করে বিসিএসইউ-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, “যখনই কোথাও আমাদের অভিযোগ নিয়ে যাই, তার আগেই মালিকপক্ষের বার্তা ওখানে পৌছায় যায়। নিজেদের দায়ভার স্বীকার না করে এই ধরণের অপপ্রচার অবিলম্বে মালিকপক্ষের বন্ধ করতে হবে।”

 

 

শ্রমিকদের নিজেদের আরও সচেষ্ট হতে শ্রীমঙ্গল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর-এর উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মাদ মাহবুবুল হাসান বলেন, “শুধু দায় দিয়ে গেলে তো হবে না, আপনাদেরও কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। আইনের লঙ্ঘনের দায়ে থানায় জিডি করতে পারেন, ইউনিয়ন এই ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন।” মালিকপক্ষের প্রতিনিধিত্বের ব্যাপারেও তিনি মন্তব্য করেন, “চা বাগানের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সমস্যা নিরসনের পথ খুঁজতে হবে এবং এরকম পদক্ষেপে মালিকপক্ষের উপস্থিতি খুবই জরুরি।”

 

 

 

আলোচনা পর্বে সম্মানিত অতিথি এবং আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সুয়েব হোসেন চৌধুরী, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলী, সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সত্যকাম চক্রবর্তী, বিসিএসইউ-এর সভাপতি মাখনলাল কর্মকার, এবং বিসিএসইউ-এর অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি।

 

গবেষণার উপর সরকারি পর্যায় থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিক পর্যন্ত সবার প্রচেষ্টা আরও বৃদ্ধির জন্য জোর দিয়ে সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সভা সমাপ্ত করেন সেড পরিচালক।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।