অটোরিকশা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে
       
খুঁজুন                
                               
সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

অটোরিকশা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ণ
অটোরিকশা এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে

সিলেটে গণপরিবহন বলতে সিএনজি চালিত অটোরিকশাকেই বোঝায়। এর বাইরে এখনো তেমন কোনো প্ল্যাটফরম গড়ে উঠেনি। সিলেট সিটি করপোরেশন চেয়েছিল যাত্রীবাহী বাসকেন্দ্রিক গণপরিবহন চালাতে। সেটি চালিয়েছিলও। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াও কোনো ফলাফল আসেনি। এ কারণে সিএনজি অটোরিকশা নির্ভরই সিলেটের মানুষ। কিন্তু দিনে দিনে অটোরিকশাগুলো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেটি নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসনও।

 

 

সিলেটে বৈধ সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা ১৯ হাজার ২৩২। বাস্তবে নগর এবং জেলায় চলছে এর দ্বিগুণ। বৈধের চেয়ে এখন অবৈধের সংখ্যা বেশি। বিআরটিএ থেকে অনুমোদনপ্রাপ্ত সিএনজি অটোরিকশা যথেষ্ট বলে দাবি করছেন কেউ কেউ।

 

 

 

২০১৪ সাল থেকে বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে সিলেটের সড়কে চলাচলের জন্য নতুন কোনো সিএনজি অটোরিকশার বৈধতা দেয়নি। এরপরও শো-রুম থেকে সিএনজি বিক্রি কমেনি। বর্তমানে শো-রুম থেকে কেনা অনটেস্ট অটোরিকশার সংখ্যা ৫ থেকে ৭ হাজারের কাছাকাছি। যেগুলো কোনো বৈধতা ছাড়াই গত ১১ বছর ধরে সিলেটের সড়কে চলছে। এ ছাড়া চোরাই ও অন্য জেলার মিলিয়ে গাড়ির সংখ্যা হবে ১০ থেকে ১২ হাজার।

 

 

 

এসব সিএনজি অটোরিকশা চলার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পুলিশের টোকেন বাণিজ্য। সেগুলো পরিচালনা করছেন সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক আলতাফ, আজমল, ওয়ারিছসহ কয়েকজনের সিন্ডিকেট। মাসে এক হাজার টাকা করে টোকেন নিয়ে এসব সিএনজি অটোরিকশা সড়কে চলেছে। বছরে টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।

 

 

 

৫ই আগস্ট পটপরিবর্তনের পর সিলেটে টোকেন বাণিজ্য নিয়ে হুলস্থুল পড়ে। শ্রমিক নেতাদের অবৈধ কর্মকাণ্ডে যখন পুলিশ বিতর্কিত হয় তখন বিষয়টি নজরে আসে পুলিশ কমিশনার মো. রেজাউল করিমের। তিনি ট্রাফিক বিভাগকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেন। ট্রাফিক বিভাগ থেকে ১৫ জনের মধ্যে কর্মকর্তা ও সদস্যদের বদলি করে সেখানে নতুন করে সেটআপ করেন। এই সেটাপে ট্রাফিক পুলিশের ডিসি’র নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন দক্ষিণের ডিসি মাহফুজুর রহমান। তিনি আগেও সিলেট মেট্রো পুলিশে ট্রাফিকের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি এসে ট্রাফিক বিভাগে পুলিশের দুর্নাম ঘোচাতে কাজ শুরু করেছেন। অনটেস্ট, চোরাই ও সিএনজি অটোরিকশার বিরুদ্ধে চালাচ্ছেন সাঁড়াশি অভিযান। এ অভিযানে ইতিমধ্যে কয়েকশ’ গাড়ি আটকানো হয়েছে। টোকেন বাণিজ্যে আনা হয়েছে জিরো টলারেন্স নীতি। এতে ক্ষেপেছে অনটেস্ট সিএনজি অটোরিকশার টোকেন বাণিজ্যের সুবিধাভোগীরা। পুলিশকে টক্কর দিতে তারা ইতিমধ্যে গঠন করেছে অনটেস্ট সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। এই পরিষদের আহ্বানে নগরের চন্ডিপুল এলাকায় সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। এই সমাবেশকে ঘিরে সিলেটে কৌতুহল দেখা দিয়েছে। এ সমাবেশের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।

 

 

 

শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ জানিয়েছেন- তারা ঐক্যবদ্ধভাবে এ সমাবেশে যোগ দেবেন। অনটেস্ট সিএনজি অটোরিকশার বৈধতার বিষয়ে তারা আন্দোলনে ছিলেন, আছেন এবং আগামীতে থাকবেন।

 

 

 

তিনি জানিয়েছেন- ‘সিলেটে চলমান চোরাই ও রোহিঙ্গা গাড়ি আটক নিয়ে কোনো আপত্তি নেই। এসব গাড়ি এখন গলার কাঁটা। তবে অনটেস্ট গাড়ি চালানোর দাবি যৌক্তিক। এ কারণে এতে আমরা অংশ নিচ্ছি।’ সিলেটে অনটেস্ট, চোরাই ও রোহিঙ্গা গাড়ি যারা নিয়ন্ত্রণ করছে তারা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা। তাদের দিয়ে সিলেটের সড়কে গাড়ি চলছে। স্ট্যান্ডের সংখ্যাও বেশি। নগরের শেখঘাটের জিতু মিয়ার পয়েন্টে একসঙ্গে তিনটি স্ট্যান্ড। প্রতিটি স্ট্যান্ডে গাড়ি থাকছে। নগরের যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে সিএনজির অবৈধ স্ট্যান্ড। কোর্ট পয়েন্টে একসঙ্গে ৪ থেকে ৫টি স্ট্যান্ড। এসব নিয়ে সিলেট নগর কর্তৃপক্ষ, পুলিশ প্রশাসনও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেন না। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বার বার উদ্যোগ নেয়া হলেও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অসহযোগিতা করা হয়েছে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শ্রমিকরা একাধিক বার মুখোমুখি হয়েছে।

 

 

 

এদিকে, সিলেটে অটোরিকশার সার্বিক অব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে ট্রাফিক বিভাগ। বর্তমানে তারা যে অভিযানে রয়েছে সেখানে অনটেস্ট গাড়িকে জরিমানা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হলে চোরাই ও রোহিঙ্গা গাড়ি আটক করা হচ্ছে।

 

 

 

এ ব্যাপারে ট্রাফিক বিভাগ কঠোর বলে জানিয়েছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি ট্রাফিক মো. মাহফুজুর রহমান। তিনি জানিয়েছেন- যারা অনটেস্ট গাড়ির মালিক ও শ্রমিক তারা গাড়ি চালানোর জন্য আন্দোলন করাটা কতোটুকু যৌক্তিক সেটা প্রশ্ন রাখে। তবে পুলিশ টোকেন বাণিজ্য, অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা চলাচল বন্ধে কঠোর রয়েছে। অনুমোদন নিয়ে গাড়ি চালালে পুলিশ সবাইকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

 

 

 

তিনি বলেন- সিলেট নগরে থ্রিহুইলার সিএনজি অটোরিকশার জন্য একটি নীতিমালা প্রয়োজন। নীতিমালা না থাকার কারণে কার্যত কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। নীতিমালা নিয়ে কাজ করার জন্য গত বছর মেট্রো ট্রাফিক বিভাগ থেকে বিআরটিএকে একটি পত্র দেয়া হয়েছে। তার মতে- অনটেস্ট, চোরাই ও অন্য জেলার গাড়ি সড়ক থেকে সরিয়ে নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। পাশাপাশি আনফিট সিএনজি অটোরিকশা কমালে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে। এরপর নতুন করে নীতিমালা অনুসরণ করে অনুমোদনের বিষয়টি দেখা যেতে পারে।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।