আন্তঃসীমায় সুরমা-কুশিয়ারার তীব্র ভাঙন
       
খুঁজুন                
                               
সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২
           

আন্তঃসীমায় সুরমা-কুশিয়ারার তীব্র ভাঙন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৫:৫৯ অপরাহ্ণ
আন্তঃসীমায় সুরমা-কুশিয়ারার তীব্র ভাঙন

ভারতের বরাক নদী সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী অমলশীদে এসে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়েছে। যার একটি সুরমা এবং অন্যটি কুশিয়ারা। বর্তমানে সেই দুটি নদী আগ্রাসী হয়ে উঠেছে।

 

 

বর্ষা মৌসুম শেষে আন্তঃসীমার এ নদী দুটির পানির স্তর খুব দ্রুত নিচে নামছে। এর সঙ্গে তীরবর্তী এলাকাগুলোয় ভাঙনতীব্র আকার ধারণ করছে। এর মধ্যে জকিগঞ্জ অংশে ভাঙন সবচেয়ে প্রকট।

 

কয়েক বছর থেকে ভাঙ্গণের কবলে পড়ে শত শত একর জমি বিলীন হয়েছে। হাজারো পরিবার বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব।

 

অন্যদিকে সুরমা-কুশিয়ারা দুটি নদীরই সিলেট অংশেও ভাঙন রয়েছে। ভাঙনপ্রবণ গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের মাঝে বিরাজ করছে আতঙ্ক ।

 

অনেক এলাকার বাসিন্দারা ভাঙন রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

 

 

 

সরজমিনে দেখা গেছে, সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের দর্শা, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হেরাখলা এবং মোগলগাঁও ইউনিয়নের যোগীরগাঁওয়ে ভাঙন বেশি।

 

এছাড়া পশ্চিমদর্শা গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার সুরমা নদীর পাড়ে বসবাস করছে। যারা প্রতিনিয়ত নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকেন।

 

তাদের মধ্যে কয়েকটি পরিবারের বাড়ির কিছু অংশ এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া মোগলগাঁও ইউনিয়নের লালারগাঁও, তালুকপাড়া, খালপাড়, মিরেরগাঁও, ফতেহপুর, ফুলকুচি, পিরেরগাঁও, আকিলপুর ও নোয়াগাঁওয়ের একাংশে ভাঙন রয়েছে।

 

কান্দিগাও ইউনিয়নের দর্শা গ্রামের বাসিন্দা রহমান ফারুক বলেন, এই এলাকায় দীর্ঘদিন থেকে ভাঙন থাকায় অনেকেই গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। স্বজনরা একে অন্যের থেকে স্থানান্থরিত হতে বাধ্য হচ্ছেন।

 

গ্রামের যে অংশটি বিদ্যমান, নদীর পানি নেমে যাওয়ার পর প্রতি বছরই ভাঙন দেখা দেয়। তিনি জানান, এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন-ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।

 

কান্দিগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মনাফ জানান, তার ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রাম সুরমা নদীর তীরবর্তী। পশ্চিমদর্শা, হেরাখলা ছাড়াও ধনপুর, জাঙ্গাইল এলাকায় নদীভাঙন আগ থেকেই ছিল।

 

প্রতিবছর বর্ষায় পানির স্তর নেমে আসার সাথে ভাঙন দেখা দেয়। তিনি বলেন, গ্রামগুলো রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

 

 

এদিকে, আন্তঃসীমার নদী দুটির জকিগঞ্জ অংশে ভাঙন আরো তীব্র আকার ধারণ করেছে। হাটবাজার, ঘরবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমি, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে সুরমা ও কুশিয়ারায়। পুরো জকিগঞ্জ উপজেলার অর্ধশতাধিক স্থানে দেখা দিয়েছে ভাঙন।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বর্ষা শেষে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। উপজেলার কেছরী, মাইজকান্দি, জকিগঞ্জ বাজার, নরসিংহপুর, সুনাপুর, বেউর, মানিকপুর, ভাখরশালসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব গ্রামের কোথাও কোথাও ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।

 

জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আব্দুল মুকিত বলেন, কুশিয়ারা নদীর বাঁক এখন ছবড়িয়া গ্রামের ভেতর দিয়েই যাচ্ছে। ছবড়িয়া গ্রামের সৈয়দ আমিরুল ইসলাম মাদানী আল হুসাইনি (র.) এর মাজার নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

 

 

 

ভাঙন রোধের উদ্যোগ না নিলে তীরবর্তী অনেক গ্রামের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যেতে পারে। গ্রামের অনেকের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে তারা এখন অন্যের জায়গায় বসবাস করছে।

 

ভাঙন রোধে পদক্ষেপের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষায় উজান থেকে আসা নেমে পানির চাপে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 

আবার শীত মৌসুমে ভাঙন দেখা দেয়। প্রকৃত অর্থে জকিগঞ্জের পরিস্থিতি ভালো নয়। আমরা ভাঙন রোধের চেষ্টা করছি। সার্বিক পরিস্থিতি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

 

অন্যদিকে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ অংশেও ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ-মানিককোনা-গোলাপগঞ্জ গুরুত্বপূর্ণ সড়কের ফেঞ্চুগঞ্জ অংশের গঙ্গাপুর নামক স্থানটিতে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভাঙন শুরু হলে সড়ক বিভাগ সংস্কার কাজ করছে। তবে কুশিয়ারার ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।

 

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর ভাঙন কবলিত স্থান উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়ন। তীরবর্তী শত শত বাড়িঘর এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

 

উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফজাল হোসাইন জানান, কুশিয়ারার ভাঙন আগ্রাসী হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ফেঞ্চুগঞ্জ-মানিককোনা-গোলাপগঞ্জ রক্ষা করা যাবে না। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বড় প্রকল্প হাতে নিতে হবে। ইউনিয়নের মানিককোনা, ভেলকোনা, সুলতানপুর, গঙ্গাপুর ও গয়াসী গ্রামের বাড়িঘর এবং ফসলি জমি প্রতি বছরই নদীতে বিলীন হচ্ছে।

 

সুরমা ও কুশিয়ারার ভাঙন রোধে পদক্ষেপ প্রসঙ্গে পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ভাঙন রোধে একটি সমীক্ষা হয়েছে। এর ফল হিসেবে তিনটি ধাপে প্রকল্প তৈরি করে ঢাকা পাঠিয়েছি।

 

প্রথম ধাপে ১ হাজার ৭০০ কোটি, দ্বিতীয় ধাপে ১ হাজার ৫০০ কোটি ও শেষ ধাপে ৫০০ কোটি টাকার প্রস্তাবন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো পাস হলে নদীভাঙন আর থাকবে না বলে তার মন্তব্য।

 

নদীভাঙনের কারণ প্রসঙ্গে দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সেখানে নদী তীরবর্তী বাড়িতে অনেক পুকুর রয়েছে। যেগুলো ছিদ্র হয়ে ভাঙন দেখা দেয়। আমরা সব পুকুর ভরাট করে দিতে চাই। সিলেটের নদ-নদীতে একদিকে চর জাগলে; অন্যদিকে ভাঙন দেখা দেয়।

 

ভাঙন রোধে চরে ড্রেজিং করে সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে এলেই ভাঙন রোধ করা যাবে বলে তার মন্তব্য।

সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১২ মে, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
সিলেটে ফাহিম হ ত্যা কা ণ্ড নিয়ে যা জানালেন ভাই কামরান

সিলেটে ফাহিম হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তার ভাই মো. মহসিন কামরান, পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম ও চাচা আব্দুল হান্নান। এসময় গ্রামের সচেতন মহলের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীতে নিজের কাজকর্ম সেরে ক্লান্ত ফাহিম আহমদ (২৭) বাড়ি ফিরেছিলেন। তার মা বাড়ি ছিলেন না। মাকে ডাকছিলেন তিনি। কিন্তু তখন পূর্ব শত্রুতার জেরে আপন ফুফু একই বাড়ির মো. জিলাল উদ্দিনের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ও তার দুই ছেলে সাইদ আহমদ (২৩) ও মাহিদ আহমদ (১৯) তার সঙ্গে ব্যাঙ-বিদ্রুপ শুরু করে। ফাহিম প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষেপে যান এবং গালাগাল করতে করতে ছুটে এসে কুলসুমা বেগম ও মাহিদ তার দুই হাত চেপে ধরেন। তখন সাঈদ তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। পরে বাড়ির অন্যান্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে গোলাপগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। ডাক্তার অবস্থা বেগতিক দেখে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে তাকে ভর্তি করা হলেও পরদিন ১ মে সকাল ৮টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ফাহিম। পরদিন তার পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বাদী হয়ে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে আসামী করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩/০২/০৫/২৫)। উপরের বিবরণটি তার মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার ৯দিন পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাম্মনবাড়িয়ায় অভিযান চালিয়ে এক কলোনি থেকে কুলসুমা, সাঈদ ও মাহিদকে গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে।

তবে কুলসুমা বেগমের অপর ছেলে সৌদিআরব প্রবাসী জাকির হোসাইন এখনো তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছেন। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে আরও হত্যাকাণ্ড ঘটানোর হুমকি দেয়ায় এখন গোটা পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন। যখন তখন জাহিদের লোকজন তাদের উপর হামলা করতে পারে।

এ প্রসঙ্গে মহসিন কামরান বলেন, আমরা হুমকির প্রেক্ষিতে একটি জিডি দায়ের করেছি। তবে জাকির বিদেশে। তার কাছে প্রচুর টাকা-পয়সাও আছে। যখন তখন তার পক্ষ থেকে হামলার আশঙ্কায় আমরা শঙ্কিত। বিশেষ করে আমার বৃদ্ধ বাবা মা অসুস্থ। তাছাড়া এখন ফাহিমের শোকে গোটা পরিবারই মুহ্যমান। এ অবস্থায়  আমরা নিরাপত্তাহীন। আমি এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাই।

তিনি বলেন, আমার নির্দোষ ভাইকে তারা হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসির দাবি জানাই। পাশাপাশি এর নেপথ্যে অন্য কেই আছে কি না আমরা জানিনা। গভীর অনুসন্ধানের মাধ্যমে অন্য কেউ থাকলে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।

ফাহিমের পিতা মাওলানা আব্দুল আলীম বলেন, আমি ন্যায় বিচার চাই। জায়গা জমির মধ্যে বোনের প্রাপ্য অংশ আমরা অনেক আগেই তাদের বুঝিয়ে দিয়েছি। এরপর তারা অযৌক্তিকভাবে আমাদের সঙ্গে বিরোধে লেগে থাকে। অযৌক্তিক দাবি করতে থাকে। পঞ্চায়েত মানেনা। এখন আমার যুবক ছেলেটাকে মেরেই ফেলেছে। আমার বোন কুলসুমা এবং তার দুই ছেলে সাঈদ ও মাহিদের ফাঁসি চাই। আমার স্ত্রীও আজ পুত্রশোকে কাতর। তারও একই দাবি।

ফাহিমের চাচা আব্দুল হান্নান বলেন, বোন ভাগ্নাদের নিয়ে কলোনিতে থাকতো ভাড়াটিয়া হিসাবে। তার শ্বশুর স্বামী জিলাল উদ্দিন ও তার সন্তানদের ত্যাজ্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। দেখে আমাদের কষ্ট হয়েছিল বলে বাড়িতে এনে আশ্রয় দিয়েছিলাম। পৈতৃক জায়গা থেকে বোনের অংশ বুঝিয়েও দিয়েছিলাম। তবু তারা সন্তোষ্ট হয়নি। নানাভাবে আমাদের হয়রানি করেছে এবং অবশেষে আমাদের সবার প্রিয় ভালোবাসার ফাহিমকে তারা ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অন্যান্য গ্রামবাসীরাও খুনীদের ফাঁসির দাবি ও মাওলানা আব্দুল আলীমের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।

আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১২:২৪ অপরাহ্ণ
আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা (২ মে)

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে আজ মাঠে নামছে আবাহনী। আইপিএলে মুখোমুখি হবে গুজরাট ও হায়দরাবাদ। আছে পিএসএল, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও জার্মান বুন্দেসলিগার ম্যাচও।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

বসুন্ধরা কিংস–আবাহনী

বিকেল ৫–৩০ মি., টি স্পোর্টস

আইপিএল

গুজরাট–হায়দরাবাদ

রাত ৮টা, টি স্পোর্টস

পিএসএল

পেশোয়ার–ইসলামাবাদ

রাত ৯টা, নাগরিক টিভি

জার্মান বুন্দেসলিগা

হাইডেনহাইম–বোখুম

রাত ১২–৩০ মি., সনি স্পোর্টস টেন ২

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটি–উলভারহ্যাম্পটন

রাত ১টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১

মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২ মে, ২০২৫, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ
মে দিবস ও সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত সিলেট

মহান মে দিবস ও দু’দিন সপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে ভীড় জমেছে সিলেটের পযর্টন কেন্দ্রগুলোতে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ভ্রমন বিলাসীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে কিছুটা রুম সঙ্কট ও ভীড় চোখে পড়ার মতো। এতে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়েছেন অনেক পর্যটক।

সিলেট, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি মনোরম জেলা। ঐতিহ্যবাহী সিলেট সবুজ চা বাগান, টিলাটালা, আদিম নদী, মহিমান্বিত জলপ্রপাত এবং পবিত্র স্থানগুলোর জন্য বিশ্বমণ্ডলে খুব পরিচিত। সিলেটকে বলা হয় পর্যটন নগরী। সিলেটে রয়েছে মন মাতানো অনেক পর্যটন স্থান। সবুজের সমারোহ আর টিলা বেষ্টিত পাহাড়, শীতল জল কোনো কিছুরই কমতি নেই সিলেটে।প্রকৃতিপ্রেমী ও ইতিহাসপ্রেমী কিংবা আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনার অধিকারীরা সময়-সুযোগ পেলেই চলে আসেন সিলেটের বাতাস গায়ে মাখতে। এ অঞ্চলের রোমাঞ্চকর প্রাকৃতিক পরিবেশও দারুন উপভোগ্য।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জাফলং চা বাগান, জাফলং আগুন পাহাড়, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, পাঙথুমাই জলপ্রপাত, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, লালাখাল, ডিবির হাওর, সংগ্রাম পুঞ্জি, লক্ষণছড়া, লোভাছড়া, অ্যালভিনা গার্ডেন, সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ, মিউজিয়াম অব রাজাস, হাছন রাজার বাড়ি, নাজিমগড় রিসোর্ট, জকিগঞ্জ ত্রি-নদীর মোহনাসহ আরও বিভিন্ন মনোলোভা স্থান। এরমধ্যে সিলেট নগরী ও শহরতলীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওলিকুল শিরোমনী হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার, এমএজি ওসমানী মিউজিয়াম, লাক্কাতুরা চা বাগান, ঐতিহ্যবাহী শাহী ঈদগাহ, সুরমা পারে অবস্থিত ঐহিত্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি, কিনব্রিজ, জিতু মিয়ার বাড়িসহ এমন অনেক দর্শনীয় ঐতিহ্যের নিদর্শন রয়েছে।

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পার্শ্ববর্তী লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, তারাপুর ও দলদলি চা বাগানে ছিল উপছে পড়া ভীড়। কেউ কেউ প্রথমবারের দেখায় প্রেমে পড়েছেন চা বাগানের সৌন্দর্যের। কেউ কেউ প্রকৃতির ভালোবাসায় দুর-দূরান্ত থেকে বারবার ছুটে আসেন এই বাগানগুলোর সবুজে মিশে যেতে।

শ্রমিক দিবস ও সপ্তাহিক ছুটি ঘিরে সিলেটের কদমতলী বাস টার্মিনালে সকাল থেকেই মানুষের উপছে পড়া ভিড় দেখা গেছে। টানা তিন দিনের ছুটি পেয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সিলেটে আসছেন ভ্রমণপিপাসুরা।

পরিবহন কর্তৃপক্ষরা বলছেন, যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করতে তারা কাজ করে যাচ্ছে এবং বাস টার্মিনালে নিয়মিত মনিটরিংও করা হচ্ছে। সবরকমের বাস সার্ভিস চালু রয়েছে। সিলেটের বাইরে থেকে ঘুরতে আসা লোকজন যাতে কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই ব্যাপারেও সর্তকতা জারি করা হয়েছে।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিলেট বিভাগে ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটক নির্ভর। মে দিবসের ছুটি ও সপ্তাহিক ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন হোটেল-মোটেল এবং রিসোর্টগুলো পর্যটকে ভরপুর। সিলেটের বাইরের লোকজন আগে থেকেই বুকিং দিয়ে রাখছেন। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আর ফাঁকা পাওয়া যায়নি।

সুদূর ঢাকা থেকে পরিবার নিয়ে সিলেটে ঘুরতে আসা সাব্বির আহমদ বলেন, আমি আসলে সরকারি চাকরি করি। সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বিভিন্ন ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখে আমি সিলেটের প্রেমে পড়ে যাই। তাই সংক্ষিপ্ত এই ছুটিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমি প্রথমবার চা বাগানে এসেছি। এর আগে ছবিতে, ভিডিওতে যেরকম দেখেছি কিন্তু বাস্তবে এর রোমাঞ্চ আরো দ্বিগুণ। চা বাগানগুলো অত্যান্ত সুন্দর। সত্যিই চা বাগানের প্রকৃতি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

মে দিবসের ছুটিতে নাজির বাজার থেকে স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে আসা শামিম আহমদ বলেন, আমি সিলেটেরই বাসিন্দা। সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশ আমার অনেক ভালো লাগে। সর্বাবস্থায় নিরাপদ ভ্রমণের জন্য মানুষ সিলেটকে বেছে নেয়। আমি যখনই ছুটি পাই কিংবা সুযোগ পাই আমার পরিবার নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে চলে আসি।

নারায়নগঞ্জ থেকে ঘুরতে আসা পারভীন বেগম বলেন, সিলেটে আমি ভাইয়ের বাসায় পরিবার নিয়ে এসেছি। এসেই লাক্কাতুরা চা বাগানে চলে এসেছি। আমার বিয়ের আগে এখানে একবার এসেছিলাম। বিয়ের পর স্বামী বা সন্তানরা এবারই প্রথম এসেছে এই বাগানে। তারাও উপভোগ করছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সব রকমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল পুলিশিং জারি রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রের ভেতরে না থাকলেও কেন্দ্রগুলোর বাইরে আমাদের পুলিশের টহল সবসময় আছে। কারো কোনো সমস্যা হলে আমাদেরকে অবহিত করলে আমরা তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।