রাজধানীর ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর-আগুনের পর দেশজুড়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এবং শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক এমপিদের বাড়ি ও দলীয় অফিসে হামলার ঘটনা ঘটছে। গত কয়েক দিনে সারা দেশে প্রায় ৭ হাজারের ও বেশি
আওমীলীগ,যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ সহ দেশের শীর্ষ স্থানীয় নেতা কর্মীদের বাড়ীতে ভাংচুর এবং হামলা মামলার শিকার হন।

প্রথম সারির  নেতৃত্ব দেওয়া যেমন   রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক সেনাপ্রধান মইন  আহমেদ, দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ নেতার বাড়িতে ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করেছে শুধুই বিএনপির কর্মীরা। এ সব ঘটনা বাদ পড়েনি আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়েও নেতাকর্মীরা।

গত কাল বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ মৌলভীবাজার সদরের চুবড়াতে স্থানীয়  যুবলীগে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিজু চৌধুরীর বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের মত  ঘটনা ঘটে।

এ সময় হতাহত সিজুর পরিবারে সাথে কথা বলে  আমরা জানতে পারি, যে গত কয়েক দিন পূর্বে বাড়ীতে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছিলেন  মৌলভীবাজার সিটির সাবেক মেয়র এবং মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক
ফয়জুল করিম ময়ূন।

পরে ২০ মার্চ সকাল ১১ দিকে  অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে  বাড়ীতে দেশীয় অস্ত্র, চাপাতি, নিয়ে এলোপাতাড়ি বাড়ীর গাছপালা কাটা শুরু করেন সেজু চৌধুরীমৌলভীবাজার সিটির সাবেক মেয়র এবং মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক
ফয়জুল করিম ময়ূন। সাবেক এ মেয়রের  আদের্শে শুরু হয় বাড়ীতে ভাংচুর। বড় হেমার দিয়ে প্রথমেই  দেয়ালে আঘাত  করে নাছির রহমান। একই সাথেই অন্যদিকে  মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ছাত্রদলের সভাপতি  রিপন ভাংচুর সাথে সাথে বলতে থাকেন একটা ইটও যেন না থাকে। আরো যারা ছিলেন,  মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সাবেক যুবদলের সভাপতি জাকির আহমদ,সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মুহিতুর রহমান,সদর উপজেলার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খালিছুর রহমান,সাবেক পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, বিএনপির নেতা মাহবুব ইজদানী, সেলিম মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন,মতিন বক্স
সহ আনুমানিক ৩০ জনের বেশি বিএনপির সহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এ সময় যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ সিজু চৌধুরীর মা সৈয়দা শাহানারা বেগম  ফ্রিডম সিলেটকে বলেন, আমার ছেলে কী দোষ করেছিল?  সে তো আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেছে চুরি ডাকাতি তো করেনি। কান্না ভেঙ্গে আরো বলেন যে, সব থেকে পরিতাপের বিষয় আমার ছেলে এই এলাকার মানুষের জন্য এত কিছু করেছিল তারা তো আজকে দেখতে আসেনি এগিয়ে আসেনি সাহায্য করতে। যাদের ঘরে পানি পান করার মত টিউবওয়েল ছিল না। তাদেরকে সাহায্য করে কী আমার ছেলে পাপ করেছিল? মানুষের ডাকে যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আমার ছেলে এগিয়ে আসতো সে কী ভুল করেছিল?

শাহানারা বেগম আরো জানান যে,
হামলা চলাকালীন সময়ে মৌলভীবাজার সদর  মডেল থানায় কল দিলে  কল রিসিভ করেনি পুলিশ  । এমনকী, সিজু চৌধুরীর পরিবার বিকেলে মামলা করতে গেলে অফিসার ইনচার্জ হারুনোর রশিদ মামলাটাও নেননি। “উল্টো” হুমকি দিয়ে বলেন, মেয়রের সাথে আপোষ করে চলতে । তা না হলে সবাইকে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার রীতিমতো  হুমকি দিয়ে বসেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। হারুনোর রসিদ আরো সিজুর পরিবার বলেন, এখন  আওয়ামীলীগের আমল নয় এ বিষয় মাথায় রাখতে এবং বাড়িতে নিরাপদে কী ভাবে থাকা যায় সেই চিন্তা করতেও বলেন, পুলিশের দায়িত্বে থাকা এ কর্মকতা।

এদিকে এ  ঘটনা সম্পর্কে  মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায় কল দিলে ওসি হারুনোর রশিদ ফ্রিডম সিলেটকে জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে তিনি শুনেছেন, তবে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি থানায়। তবে,অভিযোগ পেলে এর ব্যবস্থা নিবেন  বলে জানায় সদর থানা পুলিশ।

এ সময় “ফ্রিডম সিলেট” সৈয়দা শাহানারা বেগমের অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে, হারুনোর রশিদ জবাব না দিয়ে ব্যস্ততা দেখিয়ে কল রেখে দেন ওসি।

অন্যদিকে, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূনের সাথেএ বিষয় নিয়ে  কথা বলতে কল দিলে, তিনি কল রিসিভ করেনি।