দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ত বরিশাল-ঢাকাসহ বিভিন্ন আন্তঃজেলা রুটে বিআরটিসির বাসে দেখা যাচ্ছে ভাঙা দরজা, নষ্ট জানালা, অচল ফ্যান, বিকল এসি, ছেঁড়া সিটকভার। এমনকি বাসের ছাদ থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ার মতো সমস্যাও রয়েছে। যাত্রীদের মতে, বাসযাত্রা যেন এক ধরনের সহনশীলতার পরীক্ষা।

 

 

পরিবহন বিশ্লেষক অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলকে ঘিরে যাত্রী পরিবহনের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিআরটিসি যদি এই সুযোগ কাজে না লাগায়, তবে সেটা হবে বড় ব্যর্থতা। জরুরি ভিত্তিতে নতুন বাস সংযুক্তি এবং পুরোনোগুলো বাতিল করা উচিত।

 

বরিশাল থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আফরোজা আক্তার বলেন, ‘বাসে উঠেই মনে হয় যুদ্ধ করতে যাচ্ছি। এসি তো স্বপ্নই, ফ্যানও চলে না। জানালা দিয়ে গরম বাতাস আসে। অথচ টিকিটের দাম লোকাল বাসের চেয়েও বেশি।’

আরেক যাত্রী আল আমিন বলেন, ‘সরকারি বাস বলে ভরসা করে উঠি, কিন্তু প্রতিবারই ঠকতে হয়। কখনো বাস মাঝপথে নষ্ট হয়ে যায়, কখনো দরজা আটকে যায়।’

 

অভিযোগ স্বীকার করে বিআরটিসি বরিশাল ডিপোর ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মো. জামিল হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সালের পর থেকে বরিশাল ডিপোতে কোনো নতুন বাস আসেনি। তাই বাধ্য হয়েই পুরোনো বাসগুলো মেরামত করে চালাতে হচ্ছে। আমাদের ইচ্ছা থাকলেও নতুন গাড়ি না পেলে উন্নতি সম্ভব না।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ৫০টির মতো বাস বরিশাল থেকে বিভিন্ন রুটে চলে। যেগুলো মোটামুটি সচল, সেগুলোই চালানো হচ্ছে। তবে যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়টি আমরাও জানি। আমরা কেন্দ্রীয় দফতরে বাসের চাহিদা জানিয়ে রেখেছি।’

 

জনগণের করের টাকায় পরিচালিত সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরটিসি। অথচ বরিশালের রাস্তায় এসব বাস যেন নাগরিক ভোগান্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীসেবার মান নিশ্চিত করতে বিআরটিসিকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় বাস সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে হতাশা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।