কার্গো ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সব প্রস্তুতি সেরেছে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এক্সপোর্ট কার্গো কমপ্লেক্সের নিরাপত্তা জোরদার ও বসানো হয়েছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ২৭ এপ্রিল প্রথম ফ্লাইটের গন্তব্য স্পেন। দেশটির ইনডিটেক্স নামে বায়ার কোম্পানির পণ্য যাবে।

গ্যালিস্টার ইনফিনিট এভিয়েশনের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির পুরো বিষয় তত্ত্বাবধান করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। কার্গো ফ্লাইট সামনে রেখে সিলেটের রপ্তানিকারকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। তাদের প্রত্যাশা– সিলেট নয়, সেবার মান উন্নত হলে ভারতের সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলের ব্যবসায়ীরাও ওসমানী বিমানবন্দরের এ সুবিধার আওতায় আসবেন।

গত সোমবার সরেজমিন দেখা যায়, শ্রমিকরা কার্গো কমপ্লেক্সের ভেতরে ও বাইরে রঙের কাজ করছেন। একটি অংশ পণ্য রাখার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে; আরেকটিতে বসানো হয়েছে ইভিএস, ডুয়েল এক্স-রেসহ স্ক্যানিং মেশিন। সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত রয়েছে সাব-স্টেশন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা কার্যক্রমের নিরাপত্তা দেবে বেবিচক। আর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

এতদিন ভারতের পেট্রাপোল ও গেদে স্থলবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির (ট্রান্সশিপমেন্ট) যে সুবিধা বাংলাদেশ পেত, গত ৮ এপ্রিল তা বাতিল করে দিল্লি। এর পর সড়কপথে দিল্লি বিমনবন্দর হয়ে আকাশপথে কার্গো পরিবহনের বিকল্প হিসেবে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমেদ জানান, ঢাকার পর সিলেটে প্রস্তুত করা হয়েছে দ্বিতীয় কার্গো স্টেশন। শুরুতে ইউরোপের কয়েকটি দেশে পণ্য সরাবরাহ করা হবে। বায়ার কোম্পানিসহ আমদানি-রপ্তানিকারকদের ওপর কার্গো ফ্লাইটের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে।

বেবিচক জানিয়েছে, কার্গো ফ্লাইট চালু হলে ওসমানী বিমানবন্দর দিয়ে সরাসরি পণ্য যাবে যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। কারণ, এসব দেশে সিলেট অঞ্চলে উৎপাদিত পণ্যের কদর রয়েছে। সিলেটের আমদানি-রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, তাদের অঞ্চলের শাকসবজি, জারা লেবু, পান, নাগা মরিচ, ফ্রোজেন ফিশ, নানা জাতের সুগন্ধি চাল, ঐতিহ্যবাহী মণিপুরি শাড়ি, সাতকরা, বেতের আসবাব ও নকশিকাঁথার বিশাল বাজার রয়েছে ইউরোপ এবং মধ্যপাচ্যে।

জালালাবাদ ভেজিটেবল অ্যান্ড ফ্রোজেন 

ফিশ এক্সপোর্ট গ্রুপের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ড অ্যাসোসিয়েশন কমিটি সিলেটের চেয়ারম্যান হিজকিল গুলজার বলেন, কার্গো ফ্লাইট এ অঞ্চলের রপ্তানিকারকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল, যা ২৭ এপ্রিল পূরণ হতে চলেছে। আমরা ঢাকায় বিভিন্ন চার্জ কমানোর দাবি করেছি। এটি কার্যকর হলে সহজে সিলেট থেকে বাংলাদেশ বিমানসহ বিভিন্ন কোম্পানির উড়োজাহাজে পণ্য রপ্তানি করতে পারব। সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে অদূর ভবিষ্যতে সেভেন সিস্টার্সের ব্যবসায়ীরাও সুবিধা নিতে পারবেন।