রামাদ্বান মাসকে কেন্দ্র করে পবিত্র কুরআনের যে খেদমত হযরত আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী ছাহেব (রহ.) শুরু করেছিলেন তা আজ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট এখন একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। কোন ধরনের সরকারি অনুদান ও পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই প্রায় ৮০ বছর ধরে দারুল কেরাতের এই খেদমত পরিচালিত হচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দারুল কেরাতের অনুমোদিত শাখা কেন্দ্র রয়েছে।
চল্লিশের দশকে এক নূরানি ইশারায় দারুল কেরাতের ভিত্তি রচিত হয়। তৎকালীন বিশিষ্ট আলেম ও বুযুর্গ হযরত আব্দুন নূর গড়কাপনী (র.) স্বপ্নযোগে রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আদিষ্ট হয়ে ফুলতলী ছাহেবের কাছে কেরাত শিক্ষার আবদার জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৬ সালে ভারতের আদম খাকি নামক স্থানে দারুল কেরাতের অনানুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
দারুল কেরাত শাখা পরিচালনা এক ব্যতিক্রমি পদ্ধতি। এর সাথে শত শত পরিবার, গ্রাম, পাড়া মহল্লার মানুষ স্বপ্রণোদিতভাবে জড়িয়ে আছেন। এর প্রতি রয়েছে মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা। মানুষের স্বেচ্ছায় প্রদত্ত দান অনুদানে বছরের পর বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয়ে আসছে।
জানা যায়, দারুল কিরাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত ফুলতলী ছাহেব (র.) তাঁর পীর ও মুর্শিদ হযরত ইয়াকুব বদরপুরী (রহ.) এর নির্দেশে প্রথমে বিশ্ববিখ্যাত কারী হযরত ইরকসুস আল মিসরী (রহ.) এর অন্যতম শাগরিদ হযরত মাওলানা হাফিয আব্দুর রউফ শাহবাজপুরী, করমপুরী (রহ.) ছাহেবের নিকট কোরআন শরীফ তেলাওয়াতের তালিম নেন। পরবর্তীতে মক্কা শরীফের ইমামগণের পরীক্ষক, মিসরী বংশোদ্ভূত, রঈসুল কুররা হযরত আহমদ হিজাযী (রহ.)-এর নিকট কিরাতের শিক্ষা গ্রহণ করেন। আহমদ হিজাযী (রহ.) ফুলতলী ছাহেবকে নসিহত করে বলেছিলেন- এটা তোমার কাছে আমার আমানত, এতে যেন খেয়ানত না হয়। উস্তাদের এ নির্দেশকে ফুলতলী ছাহেব সারাজীবন পালন করে গেছেন।