ডেঙ্গু ইস্যুতে দেশের অন্যান্য বিভাগের তুলনায় অনেকটাই নিরাপদ সিলেট। কিন্তু নিরাপদ সিলেটেই হঠাৎই বাড়ছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় এ আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সিলেটের বাসিন্দাদের মধ্যে। প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ আক্রন্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আর সিলেট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আক্রন্ত হচ্ছে হবিগঞ্জ জেলায়।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। কারণ এ সময়টিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। ডেঙ্গুর বিস্তার ঠেকাতে প্রতিরোধ ছাড়া কোনো উপায় নেই। যেখানে পানি জমে, সেখানে মশার আবাসস্থল হয়ে ওঠে। মশার বিস্তার যেন না ঘটে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি টানাতে হবে।
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। এতে বাড়ছে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। পুরো বিভাগে গত ১৪ দিনে (১ নভেম্বর -১৪ নভেম্বর) পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় বিভাগে শনাক্ত হয়েছেন ৪ জন। তবে বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে কেউ মারা যাননি।
বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। এরমধ্যে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন, সিলেট উইমেন্স মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১ জন, সিলেট মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে ১ জন, হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ৩ জন, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ জন ও হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন ভর্তি রয়েছেন।
এছাড়া বছরের শুরু থেকে (১ জানুয়ারি – ১৪ নভেম্বর) পর্যন্ত সিলেট বিভাগে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২২৯ জন। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ৫৬ জন, সুনামগঞ্জে ২৮ জন, মৌলভীবাজারে ১৫ জন ও হবিগঞ্জে ১২৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
এদিকে সিলেট মহানগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। মশার উৎপাতে দিনের বেলাও মশারি টানিয়ে, কয়েল জ্বালিয়ে বা অ্যারোসল স্প্রে করেও মশা থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। তবে মশক নিধনে নজর নেই সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক)। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মশা নিধনের প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ নেই তাদের কাছে।
এ বিষয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম সিলেটভিউকে বলেন, প্রায় এক বছর থেকে নানা সঙ্কটের কারণে মশকনিধন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে পরিষদে আলোচনা করেছি। চলতি মাসের ১৫ তারিখ থেকে সিসিক কার্যক্রম শুরু করবে।