বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর দেশজুড়ে রক্তপাত আর কাড়িকাড়ি মরদেহ পড়েছে। গুম-হত্যার শিকার হাজারও বনি আদমের আজও খবর পাওয়া যাচ্ছেনা। শেখ হাসিনা সরকারের আমলে মানুষের ওপর দফায়-দফায় অত্যাচার আর জুলুম-নির্যাতন হয়েছে। শুধু তাই নয়, ২০০৬ সালে লঘি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ৫৪ জন মানুষকে খুন করে তার ওপরে নাচানাচি করছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গাইবান্ধা জেলা শহরের ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও শাপলা চত্তরে হেফাজত ইসলামীর নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। রাতের আধারে হাজারো লাশ ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়। এ সবকিছুর পেছনে পরোক্ষভাবে জড়িত থেকেও নানা নাটক করে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার।

পিলখানার ঘটনার পর বিডিআর সদস্যের নাম ও পোষাক পরিবর্তন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু আজও এ ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখে নায়। ক্ষমতার দম্ভে হেফাজত ইসলামীর নেতাকর্মীরার হত্যাকাণ্ড নিয়ে সে সময় উপহাস করেছিলেন ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা সরকার। অথচ ভাগ্যের কি পরিহাস, আজ নিজেই তিনি পালিয়ে গেছেন। দলের নেতাকর্মীদের একটু শান্তনাও দিতে পারেননি তিনি।

গাইবান্ধাবাসীর উদ্দেশ্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ক্ষমতায় গেলে আমরা বৈষ্যমহীন, মানবিক ও অহংকার করার মতো একটি দেশ গড়ে তুলবো। যেখানে কোন চাঁদাবাজী, দখলদারিত্ব, সন্ত্রাসী এবং ঘুষ-দুর্নীতি থাকবে না। গাইবান্ধার মানুষের উন্নয়নে আমি নিজে থেকেই কাজ করবো। গাইবান্ধার মানুষ যাতে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে সার্বিক নজর থাকবে।

দেড়যুগ পর গাইবান্ধা জেলায় অনুষ্ঠিত এই কর্মী সম্মেলনে সকাল থেকেই ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ কানায়-কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।আয়োজনটি কর্মী সম্মেলন হলেও তা পরিণত হয় জনসমাবেশে। সমাবেশ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে জড়ো হন জামায়েত ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। ছোট-বড় মিছিল নিয়ে, স্লোগান দিতে দিতে তারা মাঠে প্রবেশ করেন। এসময় মাঠ পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায়, আশপাশের বিভিন্ন সড়কেও অবস্থান নেয় নেতাকর্মীরা।