প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। গত আগস্টে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিনিয়র কোনো ভারতীয় কর্মকর্তার এটাই প্রথম ঢাকায় সফর হতে যাচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা এমনটাই জানিয়েছেন।
প্রতিবেদন মতে, বিক্রম মিসরি সম্ভবত আগামী ১০ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক আলোচনার জন্য বাংলাদেশে আসবেন। উভয় দেশের রাজধানীতে তথা ঢাকা ও দিল্লিতে বিক্রমের সফরের প্রস্তুতির বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ কথা জানিয়েছেন। তবে দুই দেশের কেউই এখনও এই সফরের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি আরও বলেছে, ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরির এই সফরটি এমন এক সময়ে হতে চলেছে যখন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কে অভূতপূর্ব উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ভারত সমর্থিত শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নের ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আসছে নয়াদিল্লি।
সম্প্রতি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের পর গত কয়েকদিন ধরে ভারতে বাংলাদেশবিরোধী মিছিল-সমাবেশ হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
এরপর গত সোমবার (২ ডিসেম্বর) আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, ভাঙচুর ও পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলা হয়। এই ঘটনার পর দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এর কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। শুধু তাই নয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে।
এর আগে উভয় দেশের দুই পররাষ্ট্র সচিবের মধ্যে সর্বশেষ সংলাপ ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এবারের সংলাপে ভারত-অর্থায়নকৃত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো পুনরায় চালু করা, ভিসা ব্যবস্থা সহজ করা, সরাসরি ফ্লাইট বাড়ানো এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মতো ইস্যু অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারতের দ্বিতীয় একজন কর্মকর্তা বলেছেন, বাংলাদেশ এই সফরটি এগিয়ে নেয়ার জন্য আগ্রহী। কারণ ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সম্ভাব্য এই সফরকে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ শুরুর একটি সুযোগ হিসাবে দেখা হচ্ছে।